Wednesday 12 December 2012

“খলীফাতুল উমাম”

 Shobuj Bangla Blog
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আর আমি তাদের মাঝে ১২ জন নক্বীব তথা খলীফা প্রেরণ করেছি।” (সূরা আল মায়িদা: আয়াত শরীফ-১২)
এই আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় তাফসীর ইবনে কাছীরে এসেছে যে, একদা ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেছিলেন। (যখন তিনি উক্ত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন) তখন এক ব্যক্তি উনাকে সুওয়াল করলো যে, এই উম্মত তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মাঝে কতজন মহান খলীফা খিলাফত পরিচালনা করবেন? তিনি এর জবাবে বললেন, “আমরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এই ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, বনী ইসরাঈলের ১২ জন নক্বীব-এর মতো আমার উম্মতের মাঝে ১২ জন মহান খলীফা উনারা খিলাফত পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ৮নং পৃষ্ঠা, মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাযযার, তাফসীরে ইবনে কাছীর ইত্যাদি)


বিশ্বখ্যাত মুফাসসির, সীরাত লেখক এবং ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘বিদায়া-নিহায়াতে’ তাওরাত শরীফ-এর উদ্বৃতি টেনে বলেন, তাওরাত শরীফ-এ এসেছে যার অর্থ হচ্ছে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ প্রদান করেন এবং বলেন যে, তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার যারা বংশধর রয়েছেন উনাদের উন্নতি দান করবেন এবং উনাদের মধ্য থেকে ১২ জন ক্বায়িম তথা খলীফা সৃষ্টি করবেন।” অতঃপর তিনি বলেন, তাওরাত শরীফ-এ উল্লেখিত এই ১২ জন মহান ক্বায়িম তথা খলীফা উনারাই হচ্ছেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের ১২ জন মহান খলীফা। সুবহানাল্লাহ! উনারা উম্মতের মাঝে যথা সময়ে প্রকাশিত হবেন।


হাদীছ শরীফ-এ এসেছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, দ্বীন ইসলাম ততোদিন যাবৎ পরাক্রমশালী থাকবে, কুওওয়াতশালী থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মুবারক আবির্ভাব ঘটবে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে ইসলাম শক্তিশালী থাকবে ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মাধ্যমে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন।” (বুখারী- কিতাবুল আহকাম, মুসলিম ২য় জিলদ ১১৯ পৃষ্ঠা, আবূ দাঊদ ২য় জিলদ ৫৮৮ পৃষ্ঠা, তিরমিযী, মিশকাত শরীফ ৫৫০ পৃষ্ঠা, মুসনাদে আহমদ, বাযযার, তারীখুল খুলাফা- ৮, ১০ এবং ৪৬নং পৃষ্ঠা, তিবরানী, জামউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি, খছাইছুল কুবরা ২য় জিলদ ১৯৪ পৃষ্ঠা, শরহুস সুন্নাহ, মুস্তাদরিকে হাকিম, মুছান্নফে ইবনে আবী শায়বা, দালাইলুন নুবুওয়াহ, ইবনে আসাকির, আবূ আওয়ানা, আবূ ইয়ালা, ইবনে হিব্বান, মাজমাউয যাওয়াইদ, আস সুনানুল ওয়ারিদা বিল ফিতান, বিদায়া-নিহায়া ইত্যাদিসহ প্রায় পৃথিবীর সমস্ত বিশ্বখ্যাত কিতাবসমূহে ১২ খলীফার হাদীছ শরীফসমূহ রয়েছে।)


কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব এবং ইজমা-ক্বিয়াসের অসংখ্য-অগণিত দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মাঝে ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মুবারক আবির্ভাব ঘটবে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন। এই পর্যন্ত ৯ জন মহান খলীফা উনারা অতীত হয়েছেন। উনাদের মধ্যে সর্বশেষ অর্থাৎ ৯ম জন হচ্ছেন ত্রয়োদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। আরো তিন জন মহান খলীফা উনারা বাকী রয়েছেন। উনাদের মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে তিন জন বিশেষ খলীফা হবেন। উনারা হচ্ছেন- হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম, হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (তারীখুল খুলাফা ২০৯ নং পৃষ্ঠা, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি, খছাইছুল কুবরা, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, বাইহাক্বী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ইত্যাদি)


অন্য হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে চারজন বিশেষ খলীফা হবেন। উনারা হচ্ছেন হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম, হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম, হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ ইবনে আসাকির, তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ২০৯ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)
আর এই চার জন বিশেষ খলীফা উনারা হচ্ছেন- হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম তথা ত্রয়োদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম, হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম তথা সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ, মুজাদ্দিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম, হযরত মানছুর আলাইহিস সালাম তথা খলীফাতুল উমাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তথা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ মাহদী আলাইহিস সালাম। তিনি হচ্ছেন ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মধ্যে সর্বশেষ খলীফা।


সুতরাং খলীফাতুল উমাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম একজন বিশেষ খলীফা। তিনি হচ্ছেন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম। উনার মুবারক শানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আর যিনি মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম হবেন উনার খিলাফতী নিশানকে কেউ অবনত করতে পারবে না। অর্থাৎ উনার খিলাফতকে কেউ বিনষ্ট করতে পারবে না।” সুবহানাল্লাহ। (তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ২০৯ নং পৃষ্ঠা, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ ইবনে আসাকির ইত্যাদি)


সেটাই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, ছহিবুল ইলমিল আউয়ালি ওয়াল আখিরী, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আবুল খুলাফা আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার সুযোগ্য আওলাদ, খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে ইরশাদ করেন, উনার পরে খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যখন খিলাফতের মসনদে বসে খিলাফত পরিচালনা করতে থাকবেন তখন ইহুদী-খ্রিস্টান, কাফির-মুশরিক এবং মুনাফিক ও উলামায়ে ছু’রা একত্রিত হয়ে তাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকে বিনষ্ট করে দিতে চাইবে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে এত বেমেছাল কুওওয়াত, গায়েবী মদদ ও সাহায্য দ্বারা প্রেরণ করেছেন যে, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেও খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না; বরং তারা নিজেরাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে। আর উনার খিলাফতী নিশান বিজয়ী বেশে উড়তেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, আওলাদে রসূল, আল মানছুর, হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম। উনার ব্যাপারে আরো হাদীছ শরীফ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তাওফীক দিলে আমরা তা সময় মতো আলোচনা করবো। ইনশাআল্লাহ!


খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার তরফ থেকে আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পরে, খলীফাতুল উমাম, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহি সালাম তিনি যে খিলাফত পরিচালনা করবেন তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন। আর সেই বিশেষ লক্বব মুবারকখানা হচ্ছে “খলীফাতুল উমাম”- এর অর্থ হচ্ছে, উম্মতগণের খলীফা। অর্থাৎ খলীফাতুল উমাম, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের পক্ষ থেকে সমস্ত উম্মতের জন্য, গোটা বিশ্ববাসীর জন্য, পুরো কায়িনাতবাসীর জন্য একজন বিশেষ খলীফা। সুবহানাল্লাহ! উনার মুবারক উসীলায় বিশ্ববাসী দুনিয়াতে থেকেই জান্নাতী সুখ-শান্তি উপভোগ করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!


মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার হাক্বীক্বীভাবে খিদমত করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)

http://www.al-ihsan.net

No comments:

Post a Comment