Wednesday 12 December 2012

“খলীফাতুল উমাম”

 Shobuj Bangla Blog
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আর আমি তাদের মাঝে ১২ জন নক্বীব তথা খলীফা প্রেরণ করেছি।” (সূরা আল মায়িদা: আয়াত শরীফ-১২)
এই আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় তাফসীর ইবনে কাছীরে এসেছে যে, একদা ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেছিলেন। (যখন তিনি উক্ত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন) তখন এক ব্যক্তি উনাকে সুওয়াল করলো যে, এই উম্মত তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মাঝে কতজন মহান খলীফা খিলাফত পরিচালনা করবেন? তিনি এর জবাবে বললেন, “আমরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এই ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছেন, বনী ইসরাঈলের ১২ জন নক্বীব-এর মতো আমার উম্মতের মাঝে ১২ জন মহান খলীফা উনারা খিলাফত পরিচালনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ৮নং পৃষ্ঠা, মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বাযযার, তাফসীরে ইবনে কাছীর ইত্যাদি)


বিশ্বখ্যাত মুফাসসির, সীরাত লেখক এবং ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘বিদায়া-নিহায়াতে’ তাওরাত শরীফ-এর উদ্বৃতি টেনে বলেন, তাওরাত শরীফ-এ এসেছে যার অর্থ হচ্ছে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনাকে হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ প্রদান করেন এবং বলেন যে, তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার যারা বংশধর রয়েছেন উনাদের উন্নতি দান করবেন এবং উনাদের মধ্য থেকে ১২ জন ক্বায়িম তথা খলীফা সৃষ্টি করবেন।” অতঃপর তিনি বলেন, তাওরাত শরীফ-এ উল্লেখিত এই ১২ জন মহান ক্বায়িম তথা খলীফা উনারাই হচ্ছেন, হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের ১২ জন মহান খলীফা। সুবহানাল্লাহ! উনারা উম্মতের মাঝে যথা সময়ে প্রকাশিত হবেন।


হাদীছ শরীফ-এ এসেছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, দ্বীন ইসলাম ততোদিন যাবৎ পরাক্রমশালী থাকবে, কুওওয়াতশালী থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মুবারক আবির্ভাব ঘটবে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে, ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে ইসলাম শক্তিশালী থাকবে ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মাধ্যমে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন।” (বুখারী- কিতাবুল আহকাম, মুসলিম ২য় জিলদ ১১৯ পৃষ্ঠা, আবূ দাঊদ ২য় জিলদ ৫৮৮ পৃষ্ঠা, তিরমিযী, মিশকাত শরীফ ৫৫০ পৃষ্ঠা, মুসনাদে আহমদ, বাযযার, তারীখুল খুলাফা- ৮, ১০ এবং ৪৬নং পৃষ্ঠা, তিবরানী, জামউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি, খছাইছুল কুবরা ২য় জিলদ ১৯৪ পৃষ্ঠা, শরহুস সুন্নাহ, মুস্তাদরিকে হাকিম, মুছান্নফে ইবনে আবী শায়বা, দালাইলুন নুবুওয়াহ, ইবনে আসাকির, আবূ আওয়ানা, আবূ ইয়ালা, ইবনে হিব্বান, মাজমাউয যাওয়াইদ, আস সুনানুল ওয়ারিদা বিল ফিতান, বিদায়া-নিহায়া ইত্যাদিসহ প্রায় পৃথিবীর সমস্ত বিশ্বখ্যাত কিতাবসমূহে ১২ খলীফার হাদীছ শরীফসমূহ রয়েছে।)


কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব এবং ইজমা-ক্বিয়াসের অসংখ্য-অগণিত দলীল-আদিল্লাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের মাঝে ক্বিয়ামত অবধি সময়ের মধ্যে ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মুবারক আবির্ভাব ঘটবে। উনারা প্রত্যেকেই কুরাইশ বংশীয় হবেন। এই পর্যন্ত ৯ জন মহান খলীফা উনারা অতীত হয়েছেন। উনাদের মধ্যে সর্বশেষ অর্থাৎ ৯ম জন হচ্ছেন ত্রয়োদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। আরো তিন জন মহান খলীফা উনারা বাকী রয়েছেন। উনাদের মুবারক শানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে তিন জন বিশেষ খলীফা হবেন। উনারা হচ্ছেন- হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম, হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (তারীখুল খুলাফা ২০৯ নং পৃষ্ঠা, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি, খছাইছুল কুবরা, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, বাইহাক্বী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ইত্যাদি)


অন্য হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে চারজন বিশেষ খলীফা হবেন। উনারা হচ্ছেন হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম, হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম, হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম এবং হযরত মাহদী আলাইহিস সালাম।” (জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ ইবনে আসাকির, তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ২০৯ পৃষ্ঠা ইত্যাদি)
আর এই চার জন বিশেষ খলীফা উনারা হচ্ছেন- হযরত ক্বায়িম আলাইহিস সালাম তথা ত্রয়োদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী আলাইহিস সালাম, হযরত সাফফাহ আলাইহিস সালাম তথা সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ, মুজাদ্দিদ সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম, হযরত মানছুর আলাইহিস সালাম তথা খলীফাতুল উমাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তথা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ মাহদী আলাইহিস সালাম। তিনি হচ্ছেন ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মধ্যে সর্বশেষ খলীফা।


সুতরাং খলীফাতুল উমাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ এবং পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে বর্ণিত ১২ জন মহান খলীফা উনাদের মধ্য থেকে অন্যতম একজন বিশেষ খলীফা। তিনি হচ্ছেন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম। উনার মুবারক শানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আর যিনি মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম হবেন উনার খিলাফতী নিশানকে কেউ অবনত করতে পারবে না। অর্থাৎ উনার খিলাফতকে কেউ বিনষ্ট করতে পারবে না।” সুবহানাল্লাহ। (তারীখুল খুলাফা লিস সুয়ূতী ২০৯ নং পৃষ্ঠা, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ ইবনে আসাকির ইত্যাদি)


সেটাই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, ছহিবুল ইলমিল আউয়ালি ওয়াল আখিরী, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আবুল খুলাফা আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার সুযোগ্য আওলাদ, খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে ইরশাদ করেন, উনার পরে খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যখন খিলাফতের মসনদে বসে খিলাফত পরিচালনা করতে থাকবেন তখন ইহুদী-খ্রিস্টান, কাফির-মুশরিক এবং মুনাফিক ও উলামায়ে ছু’রা একত্রিত হয়ে তাদের সর্বশক্তি প্রয়োগ করে খলীফাতুল উমাম হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকে বিনষ্ট করে দিতে চাইবে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে এত বেমেছাল কুওওয়াত, গায়েবী মদদ ও সাহায্য দ্বারা প্রেরণ করেছেন যে, তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেও খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না; বরং তারা নিজেরাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ধ্বংস হয়ে যাবে। আর উনার খিলাফতী নিশান বিজয়ী বেশে উড়তেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং খলীফাতুল উমাম, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, আওলাদে রসূল, আল মানছুর, হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত মহান খলীফা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম। উনার ব্যাপারে আরো হাদীছ শরীফ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তাওফীক দিলে আমরা তা সময় মতো আলোচনা করবো। ইনশাআল্লাহ!


খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার তরফ থেকে আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত। সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পরে, খলীফাতুল উমাম, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহি সালাম তিনি যে খিলাফত পরিচালনা করবেন তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন। আর সেই বিশেষ লক্বব মুবারকখানা হচ্ছে “খলীফাতুল উমাম”- এর অর্থ হচ্ছে, উম্মতগণের খলীফা। অর্থাৎ খলীফাতুল উমাম, আল মানছূর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদের পক্ষ থেকে সমস্ত উম্মতের জন্য, গোটা বিশ্ববাসীর জন্য, পুরো কায়িনাতবাসীর জন্য একজন বিশেষ খলীফা। সুবহানাল্লাহ! উনার মুবারক উসীলায় বিশ্ববাসী দুনিয়াতে থেকেই জান্নাতী সুখ-শান্তি উপভোগ করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!


মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে খলীফাতুল উমাম, আওলাদে রসূল, আল মানছুর হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার হাক্বীক্বীভাবে খিদমত করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)

http://www.al-ihsan.net

সন্ত্রাসী ইহুদীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের নিকৃষ্ট দালাল : সউদী ওয়াহাবী বাদশাহদের গোমঁর ফাঁস!

 shobuj bangla blog

বহুদিন যাবত মুসলিম অধ্যূষিত ফিলিস্তিনে ধারাবাহিক গণহত্যা চালাচ্ছে সন্ত্রাসী ইহুদীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল। সর্বশেষ গত নভেম্বর মাস থেকে তারা আরো একধাপ এগিয়ে মুসলিম নিধন অভিযানে নেমেছে। নৃশংস এই গণহত্যা সবার চোখের সামনে ঘটলেও, এর বিরুদ্ধে বলার মত যেন কেউ নেই! বিশেষ করে বিশ্বের সাধারন মুসলিম জনতা যাদেরকে হর্তাকর্তা ভাবে, সেই সউদী ওয়াহাবী সরকার সর্বদাই এই মুসলিম গণহত্যার সময় বোবা শয়তানের মত নিশ্চুপ থাকে। তাদের মৌনতাই যেন আরো জোড়ালো সম্মতি  দেয় সন্ত্রাসী ইহুদীদের নির্বিঘেœ মুসলিম গণহত্যা চালাতে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ এই সউদী আরব যদি সন্ত্রাসী ইহুদীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের বিরুদ্ধে সকল মুসলমানদের এক হয়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলত তবে নিমিষেই তা সম্ভব ছিল। সম্ভব ছিল মুসলিম নির্যাতনকারী সন্ত্রাসী ইহুদী ও তাদের সমগোত্রীয় কাফিরদের সমুচিত জবাব দেয়া।
কিন্তু কেন সউদী আরব তথা সৌদী ওয়াহাবী বাদশাহদের এই কুৎসিত মৌনতা? তাদের শাসকদের আসনেই কে বা কারা বসে রয়েছে? ইহুদীবাদী সন্ত্রাসীদের সাথে তাদের কেনই বা এত সখ্যতা? আর কেনই বা তারা ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছু বলে না? প্রতিবাদ করে না ফিলিস্তিনে মুসলিম গণহত্যার? এই প্রশ্নগুলোর জবাব বহু পূর্বেই দিয়েছিলেন ঢাকা রাজারবাগ শরীফ হতে জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আযম,আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম। তিনি বহুবার ইরশাদ মুবারক করেছিলেন- ‘বর্তমান সউদী ওয়াহাবী শাসকগোষ্ঠিী হলো কাট্টা লানতপ্রাপ্ত ইয়াহুদীদের বংশধর!”
সুবহানাল্লাহ! উনার সেই মুবারক ভবিষ্যৎবানী অক্ষরে অক্ষরে দিবালোকের ন্যায় প্রকাশিত হচ্ছে বারেবার। অথচ, বিভিন্ন মহল হতে এ বিষয়ে চু-চেরা কিল-কাল করে বলা হয়েছিলো, কি করে সম্ভব! খাদেমুল হারামাইন শরীফাইন টাইটেল ধারনকারী সউদী ওয়াহাবী বাদশাহদের সাথে সন্ত্রাসী ইহুদী ও তাদের সমগোত্রীয়দের গোপন সখ্যতা ও মিত্রতা এবং বংশগত একতা? জ্বি হ্যা নি¤েœর তথ্য উপাত্তগুলোই সন্ত্রাসী ইহুদীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের নিকৃষ্ট দালাল হিসেবে সউদী ওয়াহাবী বাদশাহদের গোমঁর ফাঁস করেছে।

সউদ বংশের উৎপত্তি ও পরিচয় প্রসঙ্গে:-
ইতিহাসবিদগণ বর্ণনা করেছে, বর্তমানের সউদী ওয়াহাবী শাসক গোষ্ঠীর আবির্ভাব ‘আনজা গোত্র’ থেকে যারা ১৪৫০ সালে নজদ প্রদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। অধিকাংশ ইতিহাসবিদগণের মতে, সউদী ওয়াহাবী শাসকগোষ্ঠির  সেই পূর্বপুরুষের উৎপত্তি ছিলো গজবপ্রাপ্ত ইহুদীদের থেকে।
এদের পূর্বপুরুষ যে ইহুদী ধর্মীয় ছিল তা নিশ্চিত করে সউদী বাদশাহ ফয়সাল (শাসনকাল ১৯৬৪-৭৫) ওয়াশিংটন পোস্টের সাথে (১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯) এক সাক্ষাতকারে বলেছে, “আমরা সউদ পরিবার হচ্ছি ইহুদীদের চাচাতো ভাই। আর তাই আমরা যে কোন আরব বা মুসলিম শাসকদের সাথে সম্পূর্ণরূপে ভিন্নমত পোষন করব ইহুদীদের সাথে কোনরূপ শত্রুতার ব্যাপারে। আমরা চাই তাদের সাথে শান্তিতে বসবাস করতে।” নাউযুবিল্লাহ!
যার কারণে দেখা যায়, ক্ষমতাসীন সউদ পরিবার ইসরাইলি ও আমেরিকার ভাড়াটে সৈন্য নামক সন্ত্রাসীদেরকেই তাদের একান্ত দেহরক্ষী হিসেবে বেশি পছন্দ করে। পাশাপাশি এই ইহুদী সম্পৃক্ততার কারণেই তারা ছড়িয়ে দিচ্ছে দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী বাতিল আক্বীদা ও আমল তথা ওয়াহাবী মতবাদকে, ক্ষতি করছে মুসলিম উম্মাহর  সত্যিকারের আক্বিদা, আমল ও ইসলামী ঐহিত্যকে।

ইহুদীদের সাথে গোপন চুক্তি ও মুসলিম ভূমি বিক্রি:-
ইহুদীবাদী সন্ত্রাসী ইসরাইলিদের দ্বারা ফিলিস্তিনে অবলিলায় একের পর এক মুসলিম গণহত্যা চললেও সউদী শাসকগণ যে এর বিরুদ্ধে টু শব্দটি পযন্ত করে না তার মূল কারণ হলো মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচিত ‘ইহুদীদের সাথে গোপন চুক্তি’। এই চুক্তি অনুসারে মাত্র ২০ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি ইহুদীদের কাছে বিক্রি করে দেয় সউদী ওয়াহাবী বিশ্বাসঘাতকরা। উল্লেখ্য, সউদী ওয়াহাবী বাদশাহ’র নিজ হস্তে স্বাক্ষরকৃত ঐ চুক্তির দলিলের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ গতবছর মিডিয়ায় প্রকাশ হয়ে যায়, যা তোলপাড় সৃষ্টি করে সমগ্র বিশ্বে।  (বিষয়টি নিয়ে প্রেসটিভি অনলাইন রিপোর্ট করে ২রা নভেম্বর, ২০১১) ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি কঠিনভাবে সেন্সর করে নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়। কিন্ত অতি সম্প্রতি সেটি অনেক মুসলিম ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং গনমাধ্যমের নিকট হস্তগত হয়। এই লিখিত চুক্তিতে ফিলিস্তিনে সন্ত্রাসী ইহুদীদের নির্বিঘœ প্রবেশ ঘটাতে এবং ক্ষমতা খাটাতে সেই সময়কার কথিত সুপার পাওয়ার ব্রিটেনের সাথে সউদী রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ও সেই সময়কার ওয়াহাবী শাসক আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল রহমান আল সাউদ আল-ফয়সাল’র মধ্যে গোপন সমঝোতা হয়।

গোপন কালো চুক্তির স্ক্যান কপি:- আরবীতে লিখিত সউদী রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা সুলতান আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল রহমান আল সাউদ আল-ফয়সাল এর নিজ হস্তে স্বাক্ষরকৃত সেই অঙ্গীকারনামা
সহজ বাংলা অনুবার্দ: “আমি সুলতান আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল রহমান আল সাউদ আল-ফয়সাল - আমি গ্রেট ব্রিটেনের ডেলিগেট স্যার পার্সি কক্সের কাছে হাজার বার মেনে নিলাম ও অঙ্গিকার করলাম যে, গরীব ইহুদী এমনকি অইহুদীদের (মুশরিক খ্রিষ্টান সমজাতিদের) কাছেও প্যালেস্টাইন হস্তান্তরে আমার কোন বিরোধিতা নেই এবং আমি কখনও তাঁদের (ব্রিটেনের) আদেশ অমান্য করব না।” নাউযুবিল্লাহ!
এই কালো চুক্তির কারণেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের দখলদারিত্ব ও নৃশংস গণহত্যায় কোন প্রকার বাধা দেয়নি ক্ষমতাসীন ওয়াহবী সউদ পরিবারের শাসকরা। ১৯৪৮ সালে আরব ইসরাইল যুদ্ধে লোক দেখানোর জন্য সামান্য সৈন্য পাঠালেও ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালের যুদ্ধে আরবদের পক্ষে কোন প্রকার সামরিক সাহায্য করেনি তারা। ২০০৮ এর ডিসেম্বরে যখন সন্ত্রাসী ইহুদী ও তাদের সমগোত্রীয় ইসরাইলীরা ফিলিস্তিনে ব্যাপক গণহত্যা আরম্ভ করে, তখন সউদী ওয়াহাবী বাদশাহদের বোবা শয়তানের ন্যায় নিশ্চুপ ভূমিকা নিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে সারাবিশ্বে। সেই নিন্দা প্রতিবাদ এখন গোপন কালো চুক্তি ফাসেঁর কারনে বিশ্ব মুসলিম মানসে জেগে উঠেছে ঈমানদীপ্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার উত্তাল জোয়ার। দিকে দিকে তাকবীর হচ্ছে- ওয়াহাবীবাদ ইহুদীবাদ, নিপাত যাক নিপাত যাক! দ্বীন ইসলাম জিন্দাবাদ, বিশ্ব মুসলিম জিন্দাবাদ, মুজাদ্দিদ আযম জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ!


http://www.al-ihsan.net

প্রচলিত তাবলীগ জামায়াতের ভ্রান্ত আক্বীদা ও তার খন্ডন

এক নজরে তাবলীগী কুফরী এবং জওয়াব।

তাবলীগ কাহনসহ হাক্বীকত।

 বি:দ্র: ব্লগ ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ পোষ্ট। আমার জানা মতে। দয়া করে ধৈর্য্য হারাবেন না। পড়ুন  এবং শেয়ার করুন, রেফারেন্সের জন্য সেভ করুন।

Please Follow This Link :

http://www.shobujbanglablog.net/3672.html 

and also check this Link :

http://www.shobujbanglablog.net/3141.html   

 

http://www.al-ihsan.net

 

 

দেওবন্দীগং রা চরম শ্রেনীর কাফির । তাদের কিছু ভয়ংকর আক্বীদা নিম্নে দেয়া হলো।

shobuj bangla blog

দেওবন্দীদের কথিত মুরব্বীদের কিছু আক্বীদা দেখুন।

(১) আল্লাহ মিথ্যা বলতে পারেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া , ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ১৯।
রশিদ আহমদ গাংগুহী, তালিফাত রশিদিয়া, কিতাবুল আক্বাইদ অধ্যায়, পৃষ্ঠা ৯৮।
খলীল আহমদ আম্বেটী, তাজকিরাতুল খলীল, পৃষ্ঠা ১৩৫।
মেহমুদ হাসান, আল-জিহাদুল মুগিল, পৃষ্ঠা ৪১।
(২) আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দা ভবিষ্যতে কি করবে তা আগে থেকে বলতে পারেন না। বান্দা কর্ম সম্পাদনের পর আল্লাহ্‌ তা জানতে পারেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
হুসাইন আলী, তাফসীরে বুঘাতুল হাইরান, পৃষ্ঠা ১৫৭-১৫৮।
(৩) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জ্ঞানের চেয়ে শয়তান ও হযরত আযরাঈল আলাইহিস্‌ সালাম-এর জ্ঞান বেশী। (নাঊযুবিল্লাহ)
খলীল আহমদ আম্বেটী, বারাহীন-ই-কাতেয়া, পৃষ্ঠা ৫১।
(৪) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ভাগ্য সম্পর্কে জানতেন না এমনকি দেয়ালের ওপাশ সম্পর্কেও না। (নাঊযুবিল্লাহ)
খলীল আহমদ আম্বেটী, বারাহীন-ই-কাতেয়া, পৃষ্ঠা ৫১।
(৫) নবীর (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর) যদি কিছু ইলমে গায়েব থেকেও থাকে তাহলে এতে তাঁর বিশেষত্ব কী ? এমন ইলমে গায়েব তো সকল চতুষ্পদ জন্তু, পাগল ও শিশুরও আছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
আশরাফ আলী থানভী, হিফজুল ঈমান, পৃষ্ঠা ৭।
(৬) “রহ্‌মতুল্লিল আলামিন” হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন বিশেষ লক্বব নয়। তাঁর উম্মতও “রহ্‌মতুল্লিল আলামিন” হতে পারে। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১২।
(৭) সাধারণ মানুষের কাছে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাতামুন নাবিয়্যীন হলেও বুযুর্গ ব্যক্তির কাছে নয়। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, তাহযীরুন্নাছ, পৃষ্ঠা ৩।
(৮) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগে বা সর্বশেষে আসার মধ্যে কোন ফযিলত নেই। ফযিলত হলো মুল নবী হওয়ার মধ্যে। তাঁর পরে যদি এক হাজার নবীরও আগমন মেনে নেয়া হয় তাতেও হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খতমে নবুয়তের কোন রূপ বেশ-কম হবে না। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, তাহযীরুন্নাছ, পৃষ্ঠা ২৫।
(৯) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেওবন্দের উলেমাদের কাছ থেকে উর্দূ ভাষা শিখেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
খলীল আহমদ আম্বটী, বারাহীন-ই-কাতেয়া, পৃষ্ঠা ২৬।
(১০) একজন নবীর জন্য সকল মিথ্যা থেকে মুক্ত ও নিস্পাপ হওয়ার প্রয়োজন নেই। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, শফীয়াতুল আক্বাইদ, পৃষ্ঠা ২৫।
(১১ ) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তাগুদ (শয়তান) বলা যায়। (নাঊযুবিল্লাহ)
হুসাইন আলী, তাফসীর বুঘাতুল হাইরান, পৃষ্ঠা ৪৩।
(১২) আমলের মাধ্যমে নবী-রসূলের চেয়ে নবী-রসূলগণের উম্মত মর্যাদাবান হয়। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, তাহযীরুন্নাছ, পৃষ্ঠা ৫।
(১৩) আমি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পুলসিরাত থেকে পড়া থেকে রক্ষা করেছি। (নাঊযুবিল্লাহ)
হুসাইন আলী, তাফসীর বুঘাতুল হাইরান, পৃষ্ঠা ৮।
(১৪) কলেমা শরীফ-এ “লা ইলাহা ইল্লালাহু মুহমাদুর রসূলুল্লাহ্‌” এর পরিবর্তে “লা ইলাহা ইল্লালাহু আশরাফ আলী রসূলুল্লাহ্‌” এবং দরূদ শরীফ-এ “আল্লাহুম্মা ছল্লি আলা সাইয়্যিদিনা নাবিয়ানা মুহম্মদ” এর পরিবর্তে “আল্লাহুম্মা ছল্লি আলা সাইয়্যিদিনা নাবিয়ানা আশরাফ আলী” পড়লে কোন ক্ষতি হবে না। (নাঊযুবিল্লাহ)
আশরাফ আলী থানভী, রিসালা আল ইমদাদ, পৃষ্ঠা ৩৪-৩৫।
(১৫) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ (জম্মদিন) উপলক্ষে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা আর হিন্দুদের দেবতা কৃষ্ণের জম্ম দিন পালন করা একই। (নাঊযুবিল্লাহ)
খলীল আহমদ আম্বেটী, বারাহীন-ই-কাতেয়া, পৃষ্ঠা ১৪৮।
(১৬) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর বিশেষত্ব দাজ্জালের মত। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, আবে হায়াত, পৃষ্ঠা ১৬৯।
(১৭) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বড় ভাই এবং আমরা তাঁর ছোট ভাই। (নাঊযুবিল্লাহ)
খলীল আহমদ আম্বেটী, বারাহীন-ই-কাতেয়া, পৃষ্ঠা ৩।
(১৮) দরূদ তাজ মূল্যহীন এবং এটি পাঠ করা নিষিদ্ধ। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী্,‌ তাজকীরাতুর রশীদ, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১১৭।
জাকারিয়া কান্দালভী দেওবন্দী, ফাজায়েলে আমল, পৃষ্ঠা ৫২-৫৩।
(১৯) মীলাদ শরীফ, মীরাজ শরীফ, ফাতিহা খাওয়ানী, চেহলাম, সোয়েম এবং ঈছালে সওয়াব সমস্ত আমল শরীয়ত বিরোধী, বিদায়ত এবং কাফের-হিন্দুদের রেওয়াজ। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১৪৪ এবং ১৫০।
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৯৩-৯৪।
(২০) স্থানীয় কাক খাওয়া সওয়াবের কাজ। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১৩০।
(২১) হোলী ও দিওয়ালীর ভোগ খাওয়া এবং উপহার গ্রহণ করা সওয়াবের কাজ। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১২৩।
(২২) হিন্দুদের সুদের টাকা দ্বারা নির্মিত পানির চৌবাচ্চা (সাবীল) থেকে পানি পান করা জায়িয ও অধিক সওয়াবের কাজ। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১১৩-১১৪।
(২৩) রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মরে মাটির সাথে মিশে গেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া
(২৪) কোন কিছু ঘটানোর জন্য হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইচ্ছা পোষণ করার গুরুত্ব নেই। (নাঊযুবিল্লাহ)
কাশেম নানুতুবী, আবে হায়াত, পৃষ্ঠা ১৬৯।
(২৫) নবী-রসূলদের মোজেজার চেয়ে যাদুকরদের যাদু সর্বোকৃষ্ট হতে পারে। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী ,ফতওয়া রশিদিয়া , ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৫।
(২৬) যে বলবে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাজির-নাযির সে কাফির। (নাঊযুবিল্লাহ)
গোলামুল্লাহ খান, যাওয়াহিরুল কোরান।
(২৭) “ইয়া রসূলুল্লাহ” বাক্যটি কফুরী কালেমা। (নাঊযুবিল্লাহ)
রশিদ আহমদ গাংগুহী, ফতওয়া রশিদিয়া।

 এদেরকে ইবলিশের চেয়ে বড় কাফির বলতে হবে। 
 http://www.al-ihsan.net

তাবলীগ জামাতের জন্য বিস্ফোরন পোষ্ট…..গাট্টিওয়ালাদের নতুন নাম দিলাম ‘গাধা’

সাহাবী আবূ সাইদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রসুলেপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, আমার বিদায়ের পর শেষ যামানায় আমার উম্মতের মধ্য হতে পূর্বের কোন দেশ থেকে একটি জামাআত তাবলীগ নামে বের হবে, তারা কুরআন শরীফ পাঠ করবে, তাদের কুরআন শরীফ পাঠ তোমাদের পাঠের তুলনায় খুবই সুন্দর হবে। কুরআন শরীফের প্রতি বাহ্যত তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা দেখে মনে হবে যেন ওরা কুরআন শরীফের জন্য কুরআন শরীফ ওদের জন্য। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ওরা কুরআন শরীফের প্রতিটি আয়াতের উপরে ঈমান রাখবে না এবং কুরআন শরীফের কঠিন নির্দেশের উপর আমল করবে না।
এই জামা'আতের অধিকাংশ লোক হবে অশিক্ষিত ও মূর্খ। যেমন কুরআন শরীফের ও হাদীস শরীফের জ্ঞানে হবে মূর্খ তেমন সাধারণ জ্ঞানেও হবে মূর্খ। এই জামাআতে যদি কোন শিক্ষিত লোক যোগদান করে তাহলে তার আচরণ ও স্বভাব হয়ে যাবে জামাআতে যোগদানকারী অন্যান্য মূর্খের মত। মূর্খরা যেমন মূর্খতার আনুগত্য করবে তেমনি শিক্ষিত লোকটিও মূর্খদেরই আনুগত্য করবে। এই জামা'আতের বয়ান ও বক্তৃতায় থাকবে কেবল ফযিলাতের বয়ান। বিভিন্ন আমলে সর্বোচ্চ ফযিলাতের প্রমাণহীন বর্ণনাই হবে তাদের বয়ানের বিষয়বস্তু।
হে মুসলমানগণ ! ঐ জামা'আতের লোকদের নামায, রোযা অন্যান্য আমল এতই সুন্দর হবে যে, তোমরা তোমাদের নামায, রোযা ও আমল সমূহকে তাদের তুলনায় তুচ্ছ মনে করবে। এই জামা'আতের লোকেরা সাধারণ মানুষকে কুরআন শরীফের পথে তথা দ্বীনের পথে চলার নামে ডাকবে, কিন্তু তারা চলবে তাদের তৈরী করা পথে, ডাকলেও তারা কুরআনের পথে চলবে না।
তাদের ওয়াজ ও বয়ান হবে মধুর মত মিষ্টি, ব্যবহার হবে চিনির মত সুস্বাদু, তাদের ভাষা হবে সকল মিষ্টির চাইতে মিষ্টি। তাদের পোশাক পরিচ্ছদ ধারণ-ধরণ হবে খুবই আকর্ষণীয়, যেমন সুন্দর হরিণ তার হরিণির পিছনে যেমন ছুটতে থাকে তেমন সাধারণ মানুষ তাদের মিষ্ট ব্যবহার, আমলের প্রদর্শনী ও সুমধুর ওয়াজ শুনে তাদের জামা'আতের দিকে ছুটতে থাকবে।
তাদের অন্তর হবে ব্যাঘ্রের মত হিংস্র। বাঘের অন্তরে যেমন কোন পশুর চিৎকার মমতা প্রকাশ করে না, তেমন কুরআন ও হাদীসের বাণী যতই মধুর হোক তাদের অন্তরে প্রবেশ করবে না। তাদের কথাবার্তা আমল আচরণ, বয়ান যেগুলি তারা তাদের জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে, তার-ভিতরকার কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আমলগুলি বর্জন করে কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার জন্য যতবার কেউ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ প্রদর্শন করুক বাঘের অন্তরে যেমন মমতা প্রবেশ করে না তেমন তাদের অন্তরে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ প্রবেশ করবে না।
তাদের জামা'আতে প্রবেশ করার পর তাদের মিষ্টি ব্যবহারে মানুষ হবে মুগ্ধ, কিন্তু ঐ মনোমুগ্ধ ব্যবহারের পেছনে জীবন ধ্বংসকারী, ঈমান বিনষ্টকারী, ইসলামী মুল্যবোধ বিনষ্টকারী মারাত্মক বিষ বিরাজমান থাকবে। তাদের প্রশিক্ষন ধীরে ধীরে মানুষের অন্তর হতে মহান আল্লাহপাক ও রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি আনুগত্যের প্রেরণা শেষ করে দেবে এবং জামা'আতের আমীরদের আনুগত্যের প্রতি মরণপণ আকৃষ্ট করবে। আমীরগণ দেখতে হবে খাঁটি পরহেজগার দ্বীনদার ব্যক্তিদের মত, কিন্তু তার অন্তর হবে শয়তানের মত, কুরআন শরীফের ও সুন্নাহ শরীফের প্রতি বিদ্রোহী। আমীরগণ যা করে যাচ্ছে তার মধ্যে কুরআনশরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন কাজ কখনো কেউ ধরিয়ে দিলে কোনক্রমেই তা পরিবর্তন করতে প্রস্তুত হবে না। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ উপস্থাপন করার পর তারা কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ দেখেও কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ বর্জন করে মুরব্বীদের কথা মানবে। কুরআন শরীফ হাদীস শরীফের প্রতি তাদের অনীহা এতই তীব্র হবে যে, তারা অর্থসহ কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ কখনই পড়বে না, পড়ানোও যাবে না।
এই জামা'আতটি ইসলামের তাবলীগ করার কথা যতই বলুক কুরআন শরীফ যত সুন্দরই পাঠ করুক, নামা রোযা যতই সুন্দর হোক, আমল যতই চমৎকার হোক, মূলতঃ ঐ জামা'আতটি ইসলাম হতে বহির্ভূত হবে।
সাহাবা ই কিরামগণ বললেন,ইয়া রাসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ দলটি চিনবার সহজ উপায় কি হবে? আমাদিগকে জানিয়ে দিন।
রাসুলেপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এই ইসলাম বহির্ভূত জামা'আতটি চিনবার সহজ উপায় হল-
১) তারা যখন তালীমে বসবে, গোল হয়ে বসবে।
২) অল্প সময়ের মধ্যে এই জামা'আতের লোকসংখ্যা খুব বেশী হবে।
৩) এই জামা'আতের আমীর ও মুরব্বীদের মাথা নেড়া হবে। তারা মাথা কামিয়ে ফেলবে।
তীর মারলে ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। ঐ তীর আর কখনও ধনুকের দিকে ফিরে আসে না, তেমন যারা এই জামা'আতে যোগদান করবে তারা কখনও আর দ্বীনের দিকে ফিরে আসবে না। অর্থাৎ এই জামা'আতকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার জন্য কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ যত দেখানো হোক, যত চেষ্টাই করা হোক না কেন দলটি দ্বীনের পথে ফিরে আসবে না। এদের সাথে তোমাদের যেখানেই স্বাক্ষাত হোক, সংগ্রাম হবে তোমাদের অনিবার্য। এই সংগ্রাম যদি কখনও যুদ্ধে পরিণত হয় তাহলে তা থেকেও পিছ পা হবে না।
এই সংগ্রামে বা যুদ্ধে যারা মৃত্যুবরণ করবে, তাদেরকে যে পুরষ্কার আল্লাহ দান করবেন তা অন্য কোন নেক কাজে দান করবেন না।
(বুখারী, আরবী দিল্লীঃ ২য় খন্ড, পৃঃ ১০২৪, ১১২৮, মুয়াত্তা ইমামা মালেক, আরবী ১ম খন্ড, পৃঃ ১৩৮, আবূ দাউদ, আরবী দিল্লী, ২য় খন্ড, পৃঃ ৬৫৬, তিরমিযী, মিশকাত, আরবী, ২য় খন্ড, পৃঃ ৪৫৫, মুসলিম,মিশকাত, আরবী, ২য় খন্ড, পৃঃ ৪৬২)
হাদীস সমূহের বর্ণনাকারী হলেন আবূ সাঈদ খুদরী, আলী, আবূ হুরায়রা, আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ)। (দেখুন সহীহ আল বুখারী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৬৪৪৯, ৬৪৫০, ৬৪৫২, ৭০৪১ (আ.প্র.), বাংলা অনুবাদ মুয়াত্তা মালেকঃ ই.ফা. ১ম খন্ড, হাঃ নং- ৫৭৮)
 

হাদীছ শরীফ- তা ছিহাহ সিত্তাহ’র হোক অথবা অন্য কোন কিতাবের হোক তা অবশ্যই অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য-

অনেকে কোন বিষয় গ্রহন করা বা মানার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কুরআন শরীফ কিংবা বুখারী শরীফ অথবা ছিহাহ সিত্তাহ হাদীছ শরীফ-এর কিতাবের দলীল তলব করে থাকে। তারা মনে করে থাকে, এসব কিতাবের মধ্যে থাকলে তা গ্রহনযোগ্য; অন্যথায় তা গ্রহনযোগ্য নয়। অথচ শরীয়তের দলীল হলো, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস। শুধু কুরআন শরীফ ও ছিহাহ সিত্তাহ বা বুখারী শরীফ শরীয়তের দলীল নয়। কেউ প্রমান করতে সক্ষম হবে না যে, শরীয়তের কোথাও ছিহাহ সিত্তাহ বা বুখারী শরীফকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। বরং বলা হয়েছে, কুরআন শরীফ এবং হাদীছ শরীফকে অনুসরণ করার জন্য। সুতরাং, হাদীছ শরীফ- তা ছিহাহ সিত্তাহ’র হোক অথবা অন্য কোন কিতাবের হোক তা অবশ্যই অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য। কারণ শুধু ছিহাহ সিত্তাহই হাদীছ শরীফ-এর কিতাব নয়। ছিহাহ সিত্তাহ’র বাইরেও বহু হাদীছ শরীফ-এর কিতাব রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবনুস সালাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রমুখ বিখ্যাত মুহাদ্দিছ উনারা বলেন যে, ছিহাহ সিত্তাহ ছাড়াও ৫০-এর অধিক ছহীহ বা বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ-এর কিতাব রয়েছে। নিম্নে ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিম শরীফ-এর ন্যায় কতকগুলো ছহীহ হাদীছ শরীফ-এর কিতাবের নাম উল্লেখ করা হলো। যেমন-
(১) ছহীহ ইবনে খুযায়মা,
(২) ছহীহ ইবনে হাব্বান,
(৩) ছহীহ ইবনে উয়ায়না,
(৪) ছহীহ ইবনুস সাকান,
(৫) ছহীহ মুন্তাকা,
(৬) মুখতাসারেজিয়াহ,
(৭) ছহীহ যুরকানী,
(৮) ছহীহ ইসফেহানী,
(৯) ছহীহ ইসমাঈলী,
(১০) মুস্তাদরাক ইবনে হাকিম,
(১১) মুসনাদে ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি,
(১২) মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি,
(১৩) মুয়াত্তায়ে ইমাম মুহম্মদ,
(১৪) কিতাবুল আছার,
(১৫) কিতাবুল খিরাজ,
(১৬) কিতাবুল হিজাজ,
(১৭) কিতাবুল আ’মালী,
(১৮) মুসনাদে শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
(১৯) মুসনাদে আবূ ইয়ালী,
(২০) মুসনাদে আব্দুর রাজ্জাক,
(২২) মুসনাদে আব্দ ইবনে হুমায়িদ,
(২৩) মুসনাদে আবূ দাউদ তায়ালাসী,
(২৪) সুনানু দারে কুতনী,
(২৫) সুনানে দারিমী,
(২৬) সুনানে বায়হাক্বী,
(২৭) মা’রিফাতু সুনানে বায়হাক্বী,
(২৮) মা’য়ানিয়ুল আছার-তহাবী,
(২৯) মুশফিক্বিয়ুল আছার-তহাবী,
(৩০) মু’জামুল কবীর-তিবরানী,
(৩১) মু’জামুল আওসাত-তিবরানী,
(৩২) মু’জামুছ ছগীর-তিবরানী,
(৩৩) কিতাবুল ই’তিক্বাদ,
(৩৪) কিতাবুদ্ দোয়া,
(৩৫) মুসনাদে হারিস ইবনে উমামা,
(৩৬) মুসনাদে বাজ্জাজ,
(৩৭) সুনানে আবী মুসলিম,
(৩৮) সুনানে সাঈদ বিন মনছূর,
(৩৯) শরহুস্ সুন্নাহ,
(৪০) শিফা,
(৪১) হুলইয়া,
(৪২) তাহযীবুল আছার,
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, ছিহাহ সিত্তাহর বাইরেও বহু ছহীহ হাদীছ শরীফ-এর কিতাব রয়েছে। তাছাড়া ছিহাহ সিত্তাহর সকল হাদীছ শরীফই ছহীহ নয় বরং তাতে দ্বয়ীফ এমনকি মওজূ হাদীছ শরীফও রয়েছে।


http://www.al-ihsan.net

Wednesday 5 December 2012

ছাহিবুল মদীনাহ, ছাহিবুল মক্কাহ, ছাহিবুল হাত্বীম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমস্ত ইল্‌মের অধিকারী ॥ সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখন তাঁর মু’জিযা ॥ তিনি মুয়াল্লিম হিসেবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে আক্ষরিক জ্ঞান শিক্ষা দিতেন।

“যিনি (আল্লাহ পাক) কলম দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন।” (সূরা আলাক্ব/৪) অর্থাৎ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বয়ং আল্লাহ পাক লিখার যাবতীয় ইল্‌ম দিয়েই সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ পাক অন্যত্র ইরশাদ করেন, তিনি (আল্লাহ পাক) ইনসানকে সৃষ্টি করেছেন এবং বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।” (সূরা আর রহ্‌মান/২, ৩)
এখানে ‘বয়ান’ এর তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে, যা সৃষ্টি হয়েছে এবং হবে। অর্থাৎ পূর্ব ও পরবর্তী সব ঘটনার জ্ঞান। (তাফসীরে মা’আলিমুত তানযীল)
অর্থাৎ আয়াত শরীফ-এর অর্থ হচ্ছে- আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁকে সমস্ত কিছুর জ্ঞান দান করেছেন।


যেমন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জ্ঞান দান করা হয়েছে
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, ছাহিবে ছলাত ও সালাম, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমাকে (শুরু হতে শেষ পর্যন্ত) সমস্ত ইল্‌ম প্রদান করা হয়েছে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)


অতএব, প্রমাণিত হলো যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইল্‌মের অধিকারী। আর লিখাও হচ্ছে ইল্‌মের একটা অংশ। লিখা যে ইল্‌মের অংশ তা সূরা ‘আলাক্ব’-এর ৪ নম্বর আয়াত-এর ‘আল্লামা বিল ক্বলাম’ ‘তিনি (আল্লাহ পাক) তাঁেক কলম দ্বারা শিক্ষা দিয়েছেন’, এ আয়াত শরীফ দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয়। কারণ ‘আল্লামা’ শব্দটির মাছদার বা ক্রিয়ামূল হচ্ছে ‘তা’লীম’ বা শিক্ষা দেয়া। অতএব, স্বয়ং আল্লাহ পাক যাকে লিখার উপকরণ তথা কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন তিনি লিখতে জানতেন না বা লিখতে পারতেন না এ ধারণা পোষণ করা মিথ্যা তোহমত ও কুফরীর নামান্তর।


মূলতঃ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই লিখতে জানতেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সামনে (ওহী) লিখতেন, অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে অক্ষর লিখার পদ্ধতি শিক্ষা দিয়ে ইরশাদ করেন, দোয়াত এভাবে রাখ, কলম এভাবে ঘুরাও, ‘বা’কে এভাবে সোজা করে লিখ, ‘সীন’কে পৃথক কর, আর ‘মীম’কে বাঁকা করোনা, অথচ তিনি দুনিয়াবী কোন কাতিবের (লিখকের)-এর নিকট থেকে লিখা শিখেননি, আর কোন প্রাচীনকালীন কিতাব থেকেও তা পড়েননি।” (সুবহানাল্লাহি বিহামদিহী)
উল্লেখ্য, রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর লিখার প্রয়োজন হতো না। কারণ মানুষ লিখে থাকে এজন্য যে, লিখে না রাখলে ভুলে যাবে। কিন্তু রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর লিখার প্রয়োজন নেই। কারণ তিনি সমস্ত কিছুই জানতেন এবং উনাকে সমস্ত ইল্‌ম দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি আল্লাহ পাক-এর কায়িম-মুক্বাম অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর যেমন লিখার প্রয়োজন নেই। তেমনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও প্রয়োজন নেই। আর তাঁর মুয়াল্লিম স্বয়ং আল্লাহ পাক। সুতরাং তাঁর লিখা-পড়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। আর তিনি যদি লিখা-পড়া করতেন তাহলে বাতিলপন্থীরা সন্দেহ করতো।


যেমন, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আবির্ভাবের পরিচয় দেয়া ছিল কয়েকটি। যেমন, তিনি হবেন ‘উম্মী’ (অর্থাৎ নবীগণের মূল হবেন) এবং সুন্দর হস্তাক্ষরে লিখবেন কিন্তু পার্থিব ওস্তাদের কাছে লিখা-পড়া করবেন না। কোন বই-পুস্তক পড়বেন না।
যেমন, এ সম্পর্কে কুরআন শরীফে ইরশাদ হচ্ছে, “এর পূর্বে (নুবুওওয়াত প্রকাশের পূর্বে) হে হাবীব (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি না কোন কিতাব পড়তেন এবং না নিজ হাতে কোন কিছু লিখতেন, যদি তা করতেন, তবে বাতিলপন্থীরা নিশ্চয়ই সন্দেহ করতো (যে এটা আল্লাহ পাক-এর বাণী নয়, আপনার রচিত কোন কিতাব)।” (সূরা আনকাবুত/৪৮)


আর তিনি যে লিখতে জানতেন এ প্রসঙ্গে “ছহীহ বুখারী শরীফ”-এর ‘কিতাবুল ইল্‌ম’-এর ‘বাবু কিতাবাতিল ইল্‌মে’ অধ্যায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, “হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অসুস্থতা বৃদ্ধি পেল। তখন তিনি উপস্থিত ছাহাবীদের বললেন, তোমরা এক টুকরা কাগজ নিয়ে এস। আমি তোমাদের জন্য কতিপয় উপদেশ লিখে দিব, যাতে তোমরা পরবর্তী কালে পথভ্রষ্ট হবে না।


হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নবীয়ে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যিলক্বদ মাসে ওমরাহ্‌ করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু মক্কাবাসী তাঁকে মক্কা শরীফে প্রবেশ করতে দিতে রাজী ছিলনা, যতক্ষণ না তিনি তাদের সাথে এ মর্মে সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হন যে, তিনি সেখানে (মক্কা শরীফে) তিনদিনের অধিক অবস্থান করবেন না। অতঃপর যখন সন্ধিপত্র লিখার উপর ঐক্যমত হলো, তারা লিখলো ‘এতদ্বারা আল্লাহ পাক-এর হাবীব্‌ রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সাথে সন্ধি করলেন।’ অতঃপর মক্কার কাফিররা বললো, আমরা এটা মানিনা, কারণ যদি আমরা আপনাকে আল্লাহ্‌র রসূল হিসেবে মেনে নিয়ে থাকি তাহলে আমরা আপনাকে তো কোন রকম বাঁধাও দিতাম না বরং আপনি হলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ”ইবনে আব্দুল্লাহ্‌ আলাইহিস সালাম। সুতরাং এটাই লিখতে হবে।” তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমি আল্লাহ পাক-এর রসূল এবং আমিই হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম-এর পুত্র, তারপর তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, “রসুলুল্লাহ” শব্দটা কেটে দিন।”

হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরজ করলেন, না, আল্লাহ পাক-এর কসম! আমার পক্ষে (আল্লাহ্‌ পাক প্রদত্ত্ব) আপনার (গুণবাচক) নাম কাটা সম্ভব নয়। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উক্ত চুক্তিপত্র খানা হাতে নিলেন। তাঁর নিজ হাতে লিখার ইচ্ছা ছিলনা, তবুও সুন্দরভাবে লিখলেন, “এতদ্বারা চুক্তি করলেন মুহম্মদ ”ইবনে আব্দুল্লাহ্‌ আলাইহিস সালাম (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।”

http://www.al-ihsan.net
 

ছাহিবুল কাওছার, ছাহিবুল মাহ্‌শার, ছাহিবুল মাক্বামিল মাহমূদ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত মানুষ নন।

হযরত আব্দুল্লাহ্‌ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের কারো মত নই। (বুখারী ১/২৬৩ আবূ দাউদ/১৩৭)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরূপ নই। (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৪)
হযরত আবূ সাঈদ খুদুরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি আকৃতিগতভাবে তোমাদের মত নই।” (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৫)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছে? (বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৭) অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে কেউই আমার মত নয়। বা আমি তোমাদের কারো মত নই। তাই জনৈক কবি বলেছেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাশার, তবে তিনি অন্যান্য বাশারের মত নন। যেরূপ ইয়াকুত পাথর অন্যান্য পাথরের মত নয়।”


বাহ্‌রুল উলুম হযরত মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল আলী লখনবী রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি “মীর যাহিদ” কিতাবে উল্লেখ করেছেন, “আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত বিষয়েরই ইল্‌ম দান করেছেন, যা মহান আল্লাহ পাক-এর মহান কুদরতী কলম বা কলমে আ’লার আওতায়ও আসেনি। যা লাওহে; মাহ্‌ফুজও আয়ত্ব করতে পারেনি। কস্মিনকালেও সৃষ্টির শুরু থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত তাঁর মত কেউ পয়দা হয়নি, কেউ তাঁর সমকক্ষ হবে না। সমস্ত কায়িনাতে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই।”
উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তো অনেক দূরের কথা, উনার পুত-পবিত্রা আহলিয়াগণ অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণের শানেই আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আহলিয়াগণ! আপনারা অন্যান্য মহিলাদের মত নন।” (সূরা আহযাব/৩২)


সুতরাং যেই রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আহলিয়া হওয়ার কারণে উনারা দুনিয়ার সকল মহিলাদের থেকে তুলনাহীন হলেন, সেই মহান ব্যক্তিত্ব যিনি একমাত্র আল্লাহ পাক-এর পরেই সমস্ত প্রকার শ্রেষ্ঠত্ব, ভালাই ও কল্যাণের একচ্ছত্র অধিকারী, তিনি আমাদের মত মানুষ হন কি করে? মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “(হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মত একজন বাশার, তবে আমার প্রতি ওহী নাযিল হয়।” (সূরা কাহ্‌ফ/১১০)
এ আয়াতে কারিমা-এর প্রেক্ষিতে অনেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমাদের মতই মানুষ বলে থাকে। (নাউজুবিল্লাহ)


প্রকৃতপক্ষে এটা সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ ও ভুল। কারণ আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, যার প্রতি ওহী নাযিল হয়। বরং আমাদের মধ্যে কেউ যদি নিজের প্রতি ওহী নাযিলের দাবী করে, তবে সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। যেমন কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি সম্প্রদায়।
মূলতঃ উপরোক্ত আয়াত শরীফের সঠিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা হলো, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র আদম সন্তান হিসেবে ‘মেছাল বাশার’ বা মানুষের অনুরূপ। সেজন্যই বনী আদমকে আশরাফুল মাখলুকাত করা হয়েছে, অর্থাৎ আল্লাহ্‌ পাক মানুষকে আশরাফিয়াত দান করেছেন বা সৃষ্টির সেরা করেছেন। হাক্বীক্বত তিনি আমাদের মত মানুষ নন।


লক্ষ-কোটি দিক বা বিষয় রয়েছে, যার দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত মানুষ নন, বরং তিনি “নূরে মুজাস্‌সাম” বা নূরের সৃষ্টি। হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম থেকে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম পর্যন্ত যে সকল পুতঃপবিত্র মহিলা ও পুরুষ আলাইহিমুস সালামগণের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছেন, তাঁদের সকলের মধ্যেই তিনি সরাসরি নূর আকারে স্থানান্তরিত হয়েছেন এবং সবশেষে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম-এর রেহেম শরীফ হতে নূর হিসেবেই যমীনে তাশরীফ এনেছেন। সে কারণে তাঁর শরীর মুবারকের কোন ছায়া ছিল না। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীর মুবারকে যা কিছু ছিল, তা সবই ছিল পবিত্র থেকে পবিত্রতম। এমনকি তাঁর প্রস্রাব ও ইস্তিঞ্জা মুবারকও ছিল পাক ও পবিত্র। যা পান করার কারণে জাহান্নামী লোকের জন্য জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। তিনি যে হাযত পুরা করতেন তাও কোন মানুষ দেখতে পেত না। যমিন তা সাথে সাথেই গ্রাস করে ফেলত বা খেয়ে ফেলত। তাঁর শরীর মুবারকে কশ্মিনকালেও মশা-মাছি বসতো না।


উম্মতের জন্য চারটির বেশী বিবাহ করা হারাম। কিন্তু আল্লাহ পাক এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য তা ছিল না। তিনি স্বয়ং নিজেই শারে’ বা শরীয়ত প্রণেতা, তিনি যা করেছেন, বলেছেন ও সম্মতি দিয়েছেন তাই শরীয়ত। পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তা নয়। সাধারণ মানুষ পরস্পর পরস্পরকে যেভাবে ডেকে থাকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সেভাবে ডাকলে কুফরী হবে।


সাধারণ মানুষের কলেমা শরীফ হচ্ছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসুলুল্লাহ’ (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পক্ষান্তরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কলেমা শরীফ হচ্ছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইন্নি রসুলুল্লাহ’ যা সাধারণ মানুষ দাবী করলে কাফির হবে। সাধারণ মানুষের আহলিয়াকে তালাক দিলে বা স্বামী মারা গেলে আহলিয়াকে অন্য কেউ বিবাহ করতে পারে। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিদায়ের পরে হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাগণকে অন্য কোন মানুষের জন্য বিবাহ করার চিন্তা করাটাও হারাম! সাধারণ মানুষের মৃত্যূর পরে তার মীরাছ (পরিত্যাক্ত সম্পদ বণ্টন করতে হয়। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্ষেত্রে সেরূপ নয়। কারণ তিনি হায়াতুন্‌নবী।
এমনিভাবে অসংখ্য, অগণিত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা একমাত্র হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য খাছ। যা অন্য কোন মানুষ তো দূরের কথা অন্য কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণকেও দান করা হয়নি। কাজেই তিনি কোন দিক থেকেই আমাদের মত নন।


http://www.al-ihsan.net

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, সনদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন ‘নূরে মুজাস্‌সাম অর্থাৎ তিনি আপাদমস্তক নূর’।

“নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ্‌ পাক-এর পক্ষ হতে এক মহান নূর এবং একখানা সুস্পষ্ট কিতাব এসেছে।” (সূরা মায়িদা-১৫)
উল্লেখ্য, এ আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ্‌ পাক “নূর” শব্দ দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই বুঝিয়েছেন, যেহেতু তিনি আপাদমস্তক “নূর বা নূরের তৈরি।”


এ প্রসঙ্গে “তাফসীরে আবী সাউদ”-এর ৩য় জিঃ ১৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “বর্ণিত আয়াত শরীফের প্রথম শব্দ অর্থাৎ ‘নূর’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম; আর দ্বিতীয় শব্দ অর্থাৎ ‘কিতাবুম মুবীন’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো- কুরআন শরীফ।
হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহ পাক্‌-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্‌ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হয়ে যাক। আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ্‌ পাক সর্ব প্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন?
তিনি বললেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ পাক সবকিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারককে সৃষ্টি করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর প্রথম সৃষ্টিই হচ্ছে “নূরে হাবীবী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (মসনদে আব্দুর রায্‌যাক)


সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নূরের সৃষ্টি বা “নূরে মুজাস্‌সাম” তা নিম্নোক্ত বর্ণনা দ্বারাও প্রমাণিত হয়:
যেমন হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- হে আমার রব! আমাকে কি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন? জবাবে আল্লাহ্‌ পাক বলেন, হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি আমার (সৃষ্টিকৃত) সাদা নূর (যা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্বচ্ছতা ও নির্মলতার প্রতি লক্ষ্য করলাম, যে নূরকে আমি কুদরতের দ্বারা আমার হুকুমে প্রথমেই সৃষ্টি করে রেখেছিলাম।
আমি সম্মান প্রকাশার্থে উক্ত নূরকে অর্থাৎ আমার নূর বলে সম্বোধন করি। অতঃপর উক্ত নূর থেকে একটি অংশ বের করে নিলাম অর্থাৎ “নূরে হাবীবী” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তিন ভাগে ভাগ করলাম। প্রথম ভাগ দ্বারা আপনাকে অর্থাৎ আপনার আকৃতি মুবারককে ও আপনার আহলে বাইতকে সৃষ্টি করি, দ্বিতীয় ভাগ দ্বারা আপনার স্ত্রী ও ছাহাবীগণকে সৃষ্টি করি, আর তৃতীয় ভাগ দ্বারা যারা আপনার প্রতি মুহব্বত রাখেন তাঁদেরকে সৃষ্টি করেছি”.....(নূরে মুহম্মদী- ৪৭)”


অতএব, প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মুবারক সৃষ্টির উপাদান হচ্ছে- “মূল নূরে হাবীবী।” যে ‘নূরে হাবীবী’ হযরত আদম আলাইহিস্‌ সালাম থেকে হযরত খাজা আব্দুল্লাহ্‌ আলাইহিস্‌ সালাম হয়ে মা হযরত আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম-এর রেহেম শরীফে সম্পূর্ণ কুদরতীভাবে স্থান নিয়েছিল। আমাদের অবস্থা কিন্তু তার সম্পূর্ণই ব্যতিক্রম। যদি তাই হয়, তবে একথা কি করে বলা যেতে পারে যে, রসূল আমাদের মত।”
আকৃতিগতভাবে মেছাল আমাদের মত, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোন দিক দিয়েই আমাদের মত নন, বরং তিনি আমাদের থেকে সৃষ্টিগত উপাদান, কর্মকাণ্ডে ও মর্যাদায় ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে আলাদা অর্থাৎ এক কথায় সৃষ্টির মাঝে তাঁর তুলনা তিনি এককভাবে নিজেই। যেমন আল্লাহ্‌ পাক স্রষ্টা হিসেবে তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই। তদ্রুপ সৃষ্টির মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও সমকক্ষ কেউ নেই। কোনদিক দিয়েই না।
“সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরে মুজাস্‌সাম বলেই তাঁর শরীর মুবারকের কোন ছায়া ছিল না।”
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত ও প্রসিদ্ধ “নাওয়াদেরুল উছূল” কিতাবে হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে যে, হযরত হাকীম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি “নাওয়াদেরুল উছূল” কিতাবে হযরত জাকওয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই সূর্য ও চাঁদের আলোতেও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া মুবারক” দেখা যেত না।”
হযরত আল্লামা ইবনে সাবা রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “শিফাউস সুদুর” কিতাবে লিখেছেন,
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-এর ছায়া মুবারক যমীনে পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন নূর। অতঃপর যখন তিনি সূর্য অথবা চাঁদের আলোতে হাঁটতেন তখন তাঁর ছায়া মুবারক দৃষ্টিগোচর হতো না।”


এ প্রসঙ্গে “শরহে মাওয়াহেবুল লাদুন্নীয়া শরীফে” উল্লেখ আছে, “চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক ছিল না। কেননা তিনি নূর ছিলেন।” (আর নূরের কোন ছায়া নেই)
ইমামুল আল্লাম, জালালু মিল্লাত ওয়াদ্বীন, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “আনমুযাজুল লবীব ফী খাছায়িসিল হাবীব” ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দ্বিতীয় বাবের চতুর্থ অধ্যায়ে লিখেন- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছায়া মুবারক মাটিতে পড়েনি। চাঁদ ও সূর্যের আলোতেও তাঁর ছায়া মুবারক দেখা যেতো না। হযরত আল্লামা ইবনে সাবা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন- হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু সম্পূর্ণ নূর ছিলেন সেহেতু তাঁর ছায়া মুবারক ছিল না। হযরত ইমাম রাজীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অবশ্যই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূর সমস্ত কিছুকে ছাড়িয়ে যেতো।”
এ প্রসঙ্গে “শেফা শরীফ” কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূরের দেহ মুবারকের ছায়া মুবারক সূর্য ও চাঁদের আলোতেও পড়তো না। কেননা তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নূর।”


অনুরূপভাবে “আফযালুল কোরায়” উল্লেখ আছে, “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্‌ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘নূর’ ছিলেন। নিশ্চয়ই তিনি যখন চাঁদ ও সূর্যের আলোতে হাঁটতেন তখন তাঁর ছায়া মুবারক প্রকাশ পেতো না।”
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা শিহাবুদ্দীন খাফফাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি “নাসীমুর রিয়াজ” নামক কিতাবে লিখেন যে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “নবুওওয়াতের” প্রমাণের মধ্যে এটাও একটি প্রমাণ যে, তাঁর শরীর মুবারকের ‘ছায়া মুবারক’ ছিল না। যখন তিনি সূর্য ও চন্দ্রের আলোতে হাঁটতেন তখনও তাঁর “ছায়া মুবারক” পড়তো না। কেননা তিনি (আপাদ মস্তক) “নূর”। ... কিতাবুল ওয়াফা-এর লেখক, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর “ছায়া মুবারক” ছিল না। তাঁর নূরের উজ্জলতা সূর্য ও বাতির আলোর উপর প্রাধান্য লাভ করতো ...।”


এ প্রসঙ্গে “ফয়জুল ক্বাদীর শরহে জামিউছ্‌ ছগীর” কিতাবের ৩য় জিঃ, ৭৬৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “হযরত আবুল উজাফা হতে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার বিলাদতের সময় আমার মাতা হযরত আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম দেখেন যে, একখানা “নূর মুবারক” তাঁর থেকে আলাদা হয়ে বছরা শহরের দালান-কোঠা সমূহ আলোকিত করে ফেলেছে।”
“বুলুগুল আমানী” কিতাবের ২০ জিঃ, ১৮৩ পৃষ্ঠায় এ হাদীছ শরীফখানা বর্ণিত আছে যে, “হযরত ওসমান ইবনে আবিল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, যে রাত্রে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাদত লাভ করেন, সে রাত্রে আমার মাতা হযরত আমিনা আলাইহাস্‌ সালাম-এর নিকট উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সে রাত্রে আমি ঘরের ভিতর ‘নূর’ ব্যতীত কিছুই দেখিনি।”
শুধু তাই নয়, আরশ-কুরসী, লউহ-ক্বলম, জান্নাত-জাহান্নাম, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-তারকা এমনকি সমস্ত কুল-ক্বায়িনাত সৃষ্টি হয়েছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূর মুবারক থেকে।


এ প্রসঙ্গে বিশ্বখ্যাত কিতাব মাদারিজুন নুবুওওয়াতে উল্লেখ আছে,
“আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন, এবং সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছে আমার নূর মুবারক থেকে।”
তিনি যখন রাস্তায় চলতেন তখন সেই রাস্তায় নূরে ঝলমল করত। তিনি আপাদমস্তক নূর তার জ্বলন্ত প্রমাণ হল হযরত আয়িশা ছিদ্দিক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর বর্ণিত হাদীছ শরীফ। যেমন- হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাত্রে বাতির আলোতে বসে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাপড় মুবারক সিলাই করতেছিলাম। এমন সময় বাতিটি নিভে গেল এবং আমি সুঁচটি হারিয়ে ফেললাম। এর পরপরই নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। তাঁর চেহারা মুবারকের নূরের আলোতে আমার অন্ধকার ঘর আলোকময় হয়ে গেল এবং আমি নূরের আলোতে আমার হারানো সুঁচটি খুজে পেলাম। (সুবহানাল্লাহ)


কাজেই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের অসংখ্য দলীল আদিল্লাহ এর ভিত্তিতে প্রতিভাত হলো যে, আখিরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরে মুজাস্‌সাম তথা আপাদমস্তক নূর, তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ করলে কাফির হওয়া ছাড়া কোন পথই নেই। যার সাক্ষী স্বয়ং আল্লাহ পাক।
পরিশেষে মহান আল্লাহ পাক-এর দরবার শরীফে এই আরযী যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নূরে মুজাস্‌সাম তথা আপাদমস্তক নূর এই আক্বীদায় আক্বীদাভুক্ত করে আল্লাহ পাক-এর সন্তুষ্টি এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি রিযামন্দী হাছীল করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন)


http://www.al-ihsan.net

নূরে আউয়াল, নূরে কায়িনাত, নূরে মুজাস্‌সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারকের ফযীলত।

আল্লাহ পাক-এর অনেক সুন্দরতম নাম মুবারক রয়েছে। সে সমস্ত নাম মুবারকের মাধ্যমে আল্লাহ পাককে ডাক।” (সূরা আরাফ-১৮০)
এ আয়াত শরীফের তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এরও অনেক সুন্দর সুন্দর নাম মুবারক রয়েছে; সে সমস্ত নাম মুবারকের মাধ্যমে তোমরা উনাকে স্মরণ কর।”
মূলতঃ সমস্ত প্রশংসার মালিক মহান আল্লাহ পাক, যিনি তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সবকিছুই বিশেষভাবে তাৎপর্যমন্ডিত করেছেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারককেও তিনি করেছেন অনুপম বৈশিষ্ট্য মন্ডিত। যার হাক্বীক্বত উপলদ্ধি করা কেবল তাঁর আখাছছুল খাছ আশিকদের পক্ষেই সম্ভব।
স্মর্তব্য যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বরকতময় ও রহমতপূর্ণ নামসমূহ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ পাক এবং তা কেবল একটি দু’টি নয় বরং অগণিত ও অসংখ্য।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক ব্যক্ত হয়েছে কুরআন শরীফে, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবে এবং উলামায়ে আরিফীনগণের কিতাবে
কুরআন শরীফে বিবৃত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনেক নাম মুবারকের মাঝে- মুহম্মদ, আহমদ, ইয়াসীন, ত্বাহা, মুয্‌যাম্মিল, মুদ্দাছ্‌ছির, আব্দুল্লাহ, রহমাতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
এখানে স্মর্তব্য যে, হযরত গউছুল আ’যম, বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ আরো অনেক রাসিখুনা ফিল ইল্‌ম্‌ বা সাবিকুন (যাঁরা নিজেদের রূহানীয়তের সম্মৃদ্ধি হেতু স্বয়ং রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ ও হিকমত জেনে নিতে সক্ষম) তাঁদের মতে, কুরআন শরীফে উল্লেখিত হুরূফে মুকাত্তায়াতগুলোতে যেমন রয়েছে তাওহিদের গুঢ় তত্ত্ব, তদ্রুপ রয়েছে রিসালতের নিগুঢ় ইঙ্গিত এবং অন্যান্য বিষয়ের ইঙ্গিত। তার সাথে রয়েছে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মর্যাদা-মর্তবার গুপ্ত রহস্যসহ নাম মুবারক-এর অন্তর্ভুক্তি।
মুলতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারকের যাহির এবং বাতিন দু’টি দিক রয়েছে। উলামায়ে আরিফীনগণ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারকের যাহিরী ও বাতিনীগত দিকের অর্থ প্রকাশ করেছেন।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সকল নাম মুবারকের মাঝে ‘মুহম্মদ’ ও ‘আহমদ’ নাম মুবারক দু’টি বিশেষরূপে খাছ। এ নাম মুবারক দু’টিরও রয়েছে যাহিরী ও বাতিনী পরিচয়।
উল্লেখ্য, “মুহম্মদ” নামের মাঝে রয়েছে- দু’টি ‘মীম’। এর ব্যাখ্যা অনেক। যেমন একটি ‘মীম’ দ্বারা মুহিব্বিয়াত (মুহব্বতকারী)। অপর ‘মীম’ দ্বারা মাহবূবিয়াতের (যাকে মুহব্বত করা হয়) ইঙ্গিত প্রকাশ পায়।
এর প্রথম ‘মীম’ দ্বারা মালিক তায়ালা বা আল্লাহ পাক এবং দ্বিতীয় ‘মীম’ দ্বারা মাখলূক্বাত বা সৃষ্টি জগতের ইশারার প্রকাশ ঘটে।
আবার প্রথম মীম দ্বারা মুরীদ (ইচ্ছাকারী) এবং দ্বিতীয় মীম দ্বারা মুরাদ (যাকে ইচ্ছা করা হয়)-এর ইশারাও অনেকে ব্যক্ত করেছেন।
মূলকথা- এর দ্বারা বুঝা যায় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম স্বরূপ অথবা আল্লাহ পাক-এর সাথে মানুষ ও মাখলুক্বাতের সম্পর্ক তৈরি করনেওয়ালা এবং সৃষ্টিকর্তার তরফ হতে সৃষ্টির প্রতি প্রেরিত ও সৃষ্টির তরফ হতে সৃষ্টিকর্তার নিকট ওসীলা স্বরূপ।
উলামায়ে আরিফীনগণ উল্লেখ করেছেন, “যাহির হিসেবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং বাতিন হিসেবে তাঁর নাম মুবারক ‘আহমদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।


আর ‘মুহম্মদ’ নামের মত ‘আহমদ’ নামেরও অনেক গুপ্তভেদ রয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক-এর এক নাম মুবারক ‘আহাদ’ আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক ‘আহমদ’। ‘আহমদ’ নাম মুবারকে মধ্যস্থিত মীম দ্বারা মাখলুকের ইশারা প্রকাশ পায় অর্থাৎ মাখলুকের মধ্যে তিনি আহাদ বা একা, তাঁর কোন তুলনা নেই এবং মীম দ্বারা মাহবুবিয়াতের পূর্ণতার দিকেও ইশারা প্রকাশ পায়। এছাড়া এই মীম অক্ষর দ্বারা আল্লাহ পাক-এর দিকে ইশারা করা হয়। মূল কথা- আল্লাহ তায়ালার সাথে তিনি একা অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালার সাথে তাঁর সম্পর্কই সর্বদা বিদ্যমান।
‘মুহম্মদ’ নাম মুবারকের অর্থ সর্বোত্তম প্রশংসিত আর ‘আহমদ’ নাম মুবারকের অর্থ সর্বোত্তম প্রশংসাকারী।


মূলতঃ এ উভয় মুবারক নামই আল্লাহ পাক-এর কাছে চরম, পরম পছন্দনীয়। যে কারণে এই নামে যাঁদের নামকরণ করা হয়েছে বা হবে তারাও আল্লাহ পাক-এর কাছ থেকে অশেষ রহমত, বরকত ও ফযীলত প্রাপ্ত হবেন। যেমন- এ প্রসঙ্গে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, প্রাণের আঁক্বা, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক-এর দরবারে দু’ ব্যক্তিকে দন্ডায়মান করানো হবে, আর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর হুকুম দিবেন। এতে বিস্মিত হয়ে উক্ত দু’ ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার কাছে আরয করবেন, হে বারে ইলাহী! কোন জিনিস আমাদেরকে জান্নাতের অধিকারী ও উপযোগী করলো? আপনার রহমত দ্বারা জান্নাতে যাবো, এ ধরনের আশা করা ছাড়া আমরা তো আর কোন নেক আমল করিনি। তাঁদের কথা শুনে রব্বুল ইজ্জত বলবেন, “যাও তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করো। কেননা আমি স্বয়ং জাতের কসম দ্বারা আমার উপর অবশ্য কর্তব্য করে দিয়েছিলাম যে, আমি ঐ ব্যক্তিকে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করাবনা, যার নাম হবে ‘আহমদ’ বা ‘মুহম্মদ’।” (হাক্বীক্বতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী)


হযরত জা’ফর ইবনে মুহম্মদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রেওয়ায়েত করেছেন যে, ক্বিয়ামতের দিন, ইয়া মুহম্মদ বলে ডাকা হবে। তখন যে সমস্ত ব্যক্তির নাম মুহম্মদ ছিল, তারা সকলে মাথা উঠাবে। আল্লাহ পাক বলবেন, “তোমরা সাক্ষী থাক যে, আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-এর নাম মুবারক-এর সাথে যাদের নাম মিল রয়েছে তাদের প্রত্যেককে আমি ক্ষমা করলাম।” (হাক্বীক্বতে মুহম্মদী মীলাদে আহমদী)


আর শুধু পরকালেই নয়, দুনিয়াতেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক-এর অনুকরণে নাম করণের ফযীলত বহুমুখী। নুজহাতুল মাজালিস ও তাফসীরে রুহুল বয়ানে উল্লেখ আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, “যদি কারো সন্তান হবার সম্ভাবনা থাকে এবং সে যদি নিয়ত করে যে, তার ছেলে হলে তার নাম মুহম্মদ রাখা হবে, তবে তার ছেলেই হবে। এমনি করে যার সন্তান বাঁচে না সে যদি নিয়ত করে যে, ছেলে বাঁচলে তার নাম মুহম্মদ রাখা হবে, তবে তার সন্তান বেঁচেই থাকবে।’ উল্লেখ্য এরকম আরো অনেক ফযীলতের কথা উল্লেখ রয়েছে।
মূলতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুকরণে নাম রাখা দুনিয়ায় যেমন রহমত, বরকত ও ফযীলতের কারণ, আখিরাতেও তেমনি শাফায়াত, নাযাত ও বরকতের কারণ।


অতএব, অর্থহীন, খারাপ অর্থযুক্ত এবং বিধর্মী ব্যক্তিদের অনুকরণে সন্তানের নাম রাখা পরিত্যাগ করে আমাদের সকলেরই মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রিয় রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারকের অনুকরণে নাম রেখে ফযীলত ও বরকত হাছিলে প্রবৃত্ত হওয়া কর্তব্য।


 http://www.al-ihsan.net

নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌সালামগণের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের দৃষ্টিতে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্ব ও ফযীলত।

(১)
খলীফাতু রসুলিল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মীলাদ শরীফ পাঠ (মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(২)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে (বিলাদত দিবসকে) বিশেষ মর্যাদা দিল সে মূলতঃ ইসলামকেই পূনরুজ্জীবিত করল।“ (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(৩)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করল সে যেন বদর ও হুনায়েন যুদ্ধে শরীক থাকল।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(৪)
আমীরুল মু’মিনীন হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করল সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)


জগৎখ্যাত, সর্বজনমান্য, সকলের নিকট অনুসরণীয় হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর গুরুত্ব ও ফযীলত

(৫)
হযরত ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৬)
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাহ ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৭)
হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন লেবাস পরিধান করে,মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে। আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস্‌ সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।“ (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা)
(৮)
হযরত ইমাম সাররী সাক্বত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নিদিষ্ট করলো। কেননা সে তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ্‌ পাক-এর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)
(৯)
সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশ্‌তি হবে।” (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(১০)
হযরত ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
“যে ব্যক্তি মিলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে, লবণ, গম বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্যের উপর ফুঁক দেয়, তাহলে এই খাদ্য দ্রব্যে অবশ্যই বরকত প্রকাশ পাবে। এভাবে যে কোন কিছুর উপরই পাঠ করুক না কেন। (তাতে বরকত হবেই)”। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(১১)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
উক্ত মোবারক খাদ্য মীলাদ পাঠকারীর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, এমনকি তাকে ক্ষমা না করা পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয়না। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(১২)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
যদি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে কোন পানিতে ফুঁক দেয়, অতঃপর উক্ত পানি কেউ পান করে তাহলে তার অন্তরে এক হাজার নূর ও রহমত প্রবেশ করবে। আর তার থেকে হাজারটি বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ রোগ দূর হবে। যে দিন সমস্ত ক্বলব (মানুষ) মৃত্যুবরণ করবে সেদিনও ঐ মীলাদুন্নবীর পানি পানকারী ব্যক্তির অন্তর ম"ত্যু বরণ করবে না। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা) (চলবে)
(১৩)
হযরত ইমাম রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ করে বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্‌্‌যাপন করে রৌপ্যের অথবা স্বর্ণের দেরহামসমূহের উপর ফুঁক দেয় অতঃপর তা অন্য জাতীয় মুদ্রার সাথে মিশায় তাহলে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। এবং এর পাঠক কখনই ফকীর হবে না।
আর উক্ত পাঠকের হাত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর (মীলাদ পাঠের) বরকতে কখনও খালি হবে না। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’য়ামাতুল কুবরা)
(১৪)
হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন -
যে স্থানে বা মসজিদে অথবা মহল্লায় মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয় বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদ্‌্‌যাপন করা হয় সেখানে অবশ্যই আল্লাহ পাকের ফেরেস্তাগণ বেষ্টন করে নেন। আর তাঁরা সে স্থানের অধিবাসী গণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন। আর আল্লাহ পাক তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন। আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেস্তা, অর্থাৎ হযরত জিব্রাইল, মীকাইল, ইসরাফিল ও আযরাইল আলাইহিমুস্‌্‌ সালামগণ মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপনকারীর উপর সালাত-সালাম পাঠ করেন। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নি’মাতুল কুবরা)
(১৫)
ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন -
“যখন কোন মুসলমান নিজ বাড়ীতে মীলাদ শরীফ পাঠ করে তখন সেই বাড়ীর অধিবাসীগণের উপর থেকে আল্লাহ্‌ পাক অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারী, অগ্নিকাণ্ড, ডুবে মরা, বালা মুসিবত, হিংসা-বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যাদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত ব্যক্তি মারা যান তখন আল্লাহ পাক তাঁর জন্য মুনকীর-নকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর তাঁর অবস্থান হয় আল্লাহ্‌ পাক-এর সন্নিধানে সিদকের মাকামে। (সুবহানাল্লাহ্‌) (আন্‌ নেয়ামাতুল কুবরা) যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তাযীম করতে চাইবে তার জন্য উপরোক্ত বর্ণনা যথেষ্ট।
আর যে ব্যক্তির নিকট ঈদে মীলাদুন্নবীর তা’যীম নাই (সম্মান করে না) সারা দুনিয়া পূর্ণ করেও যদি তাঁর প্রশংসা করা হয় তথাপিও তার অন্তর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহব্বতে প্রকম্পিত হবে না।
আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে তাদের দলভুক্ত করুন যারা ঈদে মীলাদুন্নবীর মর্যাদা দান করেন এবং এর মর্যাদা উপলব্ধি করেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর হাবীব, নবী গনের নবী, রসূল গনের রসূল, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আখাস্‌সুল খাস মুহিব্বীন ও অনুসারী বানিয়ে দিন। আমীন। ইয়া রব্বুল আলামীন, আয় আল্লাহ পাক, সালাত ও সালাম বর্ষিত করুন সাইয়্যিদুনা নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর পরিবার ও সাহাবীগণের প্রতি কেয়ামত পযর্ন্ত।


http://www.al-ihsan.net

আল্‌জামিউ, জালীলুল ক্বদ্‌রি, জাওয়ামিউল কালিমি, নূরে মুজাস্‌সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অপরিসীম ইল্‌ম্‌ সর্বপ্রকার সীমার উর্ধ্বে।

“আমি তোমাদেরকে সামান্যতম ইলম দান করেছি। (সূরা বণী ঈসরাইল- ৮৫)
খালিক মালিক মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন হচ্ছেন ‘আলিমুল গইব’ অর্থাৎ সর্ব প্রকার গইব বা অদৃশ্য বস্তু বা বিষয়ের ইল্‌ম আল্লাহ পাক-এর রয়েছে। আল্লাহ পাক বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ছাড়াই সকল ইলমের বা ইলমে গইবের অধিকারী।
আর এরূপ ইল্‌মে গইব সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালামে পাকে ইরশাদ করেন, “আসমান-যমীনে আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইল্‌মে গইব নেই।” (সূরা নমল-৫৫) অর্থাৎ বিনা মধ্যস্থতায় বা কারো মাধ্যম ব্যতীত যে ইল্‌মে গইব তা শুধুমাত্র আল্লাহ পাক-এরই রয়েছে।
প্রথমোক্ত আয়াত শরীফে ইলমের স্বল্পতা মহান আল্লাহ পাক-এর সাধারণ বান্দাদের জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহ পাক-এর বিশেষ বিশেষ বা খাছ বান্দাগণ তথা হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস্‌ সালামগণ এবং হাক্বীক্বী নায়িবে নবী ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া তথা খাছ খাছ ওলী আল্লাহগণ এ হুকুমের বাইরে। অর্থাৎ দুনিয়াতে মানুষ বৈজ্ঞানিক, দার্শনিক ইত্যাদি যাই হোক না কেন তার জ্ঞান সামান্য থেকে সামান্যতম।


ক্ষান্তরে যাঁরা মহান আল্লাহ পাক-এর গুণে হাক্বীক্বীভাবে গুণান্বিত তথা নবী রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ, বিশেষ করে সকল নবীদের নবী, রসূলদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহ পাক-এর খাছ হাবীব বা বন্ধু হওয়ার কারণে স্বয়ং আল্লাহ পাকই তাঁকে সমস্ত প্রকার ইলম দান করেছেন। আল্লাহ পাক-এর কায়িনাতে এমন কোন বিষয় ছিল না যা তিনি জানতেন না বা জানেন না।
অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে সর্ব প্রকার ইল্‌মে গইব দান করেছেন।


মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “দয়াময় আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি ইনসান সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁকে বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন।” (সূরা আর রহমান ১-৪)
এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে খাযিনে’ উল্লেখ আছে, “বলা হয়েছে যে, ইনসান দ্বারা উদ্দেশ্য হলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর বয়ান দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে, পূর্বাপর সমস্ত কিছুর ইল্‌ম আল্লাহ পাক তাঁকে দান করেছেন। কেননা তাঁকে পূর্ববর্তী পরবর্তী এবং পরকাল সম্পর্কে সকল গাইবী বিষয়ের ইল্‌ম দান করেছেন।” অনুরূপ তাফসীরে মায়ালিমুত তানযীল, হুসাইনী, ছাবীতেও উল্লেখ আছে।
হাদীছ শরীফের বিখ্যাত ও মশহুর কিতাব ‘মিশকাত শরীফে’ উল্লেখ আছে, “হযরত আব্দুর রহমান বিন আইশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি আমার রবকে উত্তম ছূরত মুবারকে দেখেছি। আমার রব বললেন, (হে আমার হাবীব!) মুকার্‌রব ফেরেশ্‌তাগণ কোন বিষয়ে আলোচনা করছে? আমি বললাম, আপনিই অধিক জানেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তাঁর রহমতের হাত আমার দু’কাঁধের মধ্যখানে রাখলেন। আমি তাঁর ফয়েজের শীতলতা আমার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর আসমান-যমীনের সকল বিষয় ও বস্তুর ইলম আমার অর্জিত হয়ে গেল।”


এ হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘মিরকাত শরীফে’ লিখেন, “আল্লামা ইবনে হাজার রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “সামাওয়াত” দ্বারা আসমানসমূহ এমনকি তারও উপরের সমস্ত সৃষ্টির ইলমকে বুঝানো হয়েছে। যেমন মি’রাজ শরীফের ঘটনা দ্বারা বুঝা যায়। আর ‘আল আরদ’ জিন্‌স (জাতি) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, ঐ সমূদয় বস্তু যা সমস্ত যমীনের মধ্যে বরং তারও নিচে রয়েছে তার সব বিষয়েরই ইলম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অর্জিত হয়ে যায়। (শুধু তাই নয় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন) আমার জন্যে মহান আল্লাহ পাক গইব-এর সকল দরজাসমূহ খুলে দিয়েছেন।”
মূলতঃ এই প্রকারের হাদীছ শরীফ আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা এর বিষয়টা বুঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে তিনি সমস্ত ইল্‌ম ও নিয়ামতসহই সৃষ্টি হয়েছেন। কাজেই নতুন করে দেয়ার মত বিষয় নয়। বরং যা দেয়া হয়েছে সে বিষয়টা সমস্ত কায়িনাতকে বুঝানোর জন্য অনুষ্ঠান করা হয়েছে।


হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে সৃষ্টির শুরু থেকে জান্নাতবাসীদের জান্নাতে প্রবেশ এবং দোযখবাসীদের দোযখে প্রবেশ করা পর্যন্ত সকল বিষয়ের সংবাদ প্রদান করেন। এগুলো যারা স্মরণ রাখতে পেরেছেন তাঁরা স্মরণ রেখেছেন আর যাঁরা স্মরণ রাখতে পারেননি তাঁরা ভুলে গেছেন।” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
‘ছহীহ মুসলিম শরীফে” আরো উল্লেখ আছে যে, “হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে তার সব কিছুই বর্ণনা করে দিলেন, কোন কিছুই বাদ দিলেন না।”
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন “আমি সমস্ত ইলমসহ প্রেরীত হয়েছি।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ-৫১২)


বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক হযরত শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “মাদারিজুন নুবুওওয়াতে” উল্লেখ করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল বিষয় বা বস্তু সম্পর্কেই অবহিত ছিলেন। তিনি আল্লাহ পাক-এর শান তার আহকাম বা বিধি-বিধান, তাঁর ছিফাত বা গুণাবলী তার আসমা বা নাম সমূহ তাঁর আফয়াল বা কর্মসমূহের এবং আদি-অন্ত, যাহির-বাতিন ইত্যাদি সর্ব প্রকার ইলমের অধিকারী ছিলেন।”
অনুরূপ আরো ইমাম-মুজতাহিদ আউলিয়ায়ে কিরাম তাঁদের স্ব-স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর কায়িনাতের সর্বপ্রকার ইলমের অধিকারী ছিলেন। কাজেই, ইলমের স্বল্পতা বা ইলমের সীমা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জন্য প্রযোজ্য নয় বরং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন- “মুত্তালা আলাল গইব” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তাঁর হাবীবকে পরিপূর্ণ ইলমে গইব দান করেছেন। শুধু তাই নয়, বরং পূর্ববর্তী সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ এবং হক্কানী ওলীআল্লাহগণকেও মহান আল্লাহ পাক ইলমে গইব দান করেছেন বা করেন। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা। এ আক্বীদাই সকলকে পোষণ করতে হবে। এর খিলাফ বা বিপরীত আক্বীদা পোষণ করা গুমরাহী ও কুফরীর নামান্তর।


http://www.al-ihsan.net

             

মীলাদ শরীফ-কিয়াম শরীফ নূরে মুজাস্‌‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যামানাতেই ছিল।

মীলাদ শব্দের অর্থ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত করা ও তাঁর প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা। অতএব, তা আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ সবারই সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
আমরা যেভাবে মজলিস করে মীলাদ মাহফিল করে থাকি তা খোদ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণের যামানাতেই ছিল।


এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা তাঁর নিজ গৃহে সমবেত ছাহাবীগণকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশী প্রকাশ করেছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর প্রশংসা তথা তাছবীহ তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর (ছলাত-সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপসি'ত হলেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন, সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে অর্থাৎ
ক্বিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন) তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব। (সুবুলুল হুদা ফি মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাক্বীক্বতে মুহম্মদী ও মীলাদে আহমদী, পৃষ্ঠা ৩৫৫)
আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে হযরত আবূ আমের আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর গৃহে উপসি'ত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফের ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস অর্থাৎ এই দিবসে রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যমীনে তাশরীফ এনেছেন। (তিনি যখন উপসি'ত হলেন সমবেত লোকজন দাঁড়িয়ে কিয়াম শরীফ করে ছলাত ও সালাম পেশ করতঃ আসনে বসালেন।)
তিনি লোকজনের মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফিরিস্তাগণ তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ কিয়ামত পর্যন্ত তোমাদের মত এরূপ করবেন। তোমার মত সেও নাজাত ও ফযীলত লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযির, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মোস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)


উপরোক্ত হাদীছ শরীফদ্বয়ের দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং মীলাদ শরীফ পাঠ করতেন এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তা’যীম বা সম্মানার্থে কিয়াম করতেন। বর্তমানে যে সুনির্দিষ্ট তর্জ-তরীকায় মীলাদ মাহফিল হয় তাতে নূরে মুজাস্‌‌সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছিফত সংক্ষিপ্তভাবে করা হয়ে থাকে যা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।


http://www.al-ihsan.net

Tuesday 4 December 2012

get introduced with our beloved Muhammad Ibrahim Sohel

Dear Friends, 

Please get introduced with our beloved Muhammad Ibrahim Sohel Bhaijan, the famous Blogger;
popularly Known as ibsohel.The famous blogs http://att-tajdeed.blogspot.in and https://reformer1500.wordpress.com are written by him.

Contact at this Mail Id with him : ibsohel86@gmail.com

Follow Him @ Twitter : https://twitter.com/ibsohel


Aqeedah (Belief) on Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam:

Article Written By ibsohel
  • Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam is made of Noor. HE is not made of soil.
  • Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam had no shadow during the time of HIS external stay on dunya
  • Everything of HIS Body Mubarok is the most sacred to the highest level
  • Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam is Ha’dir (Omnipresent) and Na’zir (Over-looking)
  • Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam is alive in HIS RAOWZA SHAREEF. HE listens and responds to the SALAM and Durood Shareef that the Ummat (followers) recite upon HIM
  • Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam has the knowledge of unseen (GWAIB). HE has the knowledge of past, present and future
  • Observing Sayeedul A’iyad Shareef, on the occasion of arrival (Biladat Shareef) of Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam is Far’d (compulsory)
  • Calling by the term ‘Ya Rasool-ullah (Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam)’ is permissible in Islam

    http://www.al-ihsan.net

Muslim invented ‘At-Twaqwimush Shamsi calendar as an alternative to the kaafir developed ‘solar’ calendar ;

Article Written By ibsohel

Allah Pak Dictates, “Follow not the kaafir and the mushriqs”.
The Saudi decision of not using the ‘gregorian calendar’ developed by the kaafir in all official and non-official purposes is definitely praise-worthy. But then it would be appropriate for Saudi Arabia and all to use the Muslim invented ‘At-Twaqwimush Shamsi calendar as an alternative to the kaafir developed ‘solar’ calendar.”

Focal Wali-Allah of this age, Imaam and Mujtahid of the age, Imaamul Aimmah, Qutwubul A’alam, Awladur Rwasool, Habeebullah, Mamduh Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam of Rajarbagh Shareef, Dhaka, Says, “The Saudi decision of not using the ‘gregorian calendar’ in all official and non-official purposes developed by the kaafir is definitely praise-worthy. But then the Muslim invented ‘At-Twaqwimush Shamsi calendar as an alternative to the kaafir developed ‘solar’ calendar may be used.” He recently made those remarks while delivering ‘Nasihah’ (Advices) in relation to using the first solar calendar of the world, the ‘At-Twaqwimush Shamsi’ instead of a ‘gregorian calendar’ introduced by the kaafir.
Mujaddidey A’azwam Mamduh Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “It has recently been learnt through a middle-eastern newspaper that Saudi government has promulgated an order of using a lunar calendar at all official and private levels, discarding the ‘gregorian calendar’ developed by the kaafir. This decision of theirs is obviously commendable. But then, as an alternative, they could use the ‘solar calendar’ developed by the Muslims in all their offices and courts, airlines and communication systems.”
Mujaddidey A’azwam Mamduh Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “Although there had not been the use of any ‘solar calendar’ in the world by the Muslims in the past, but there has come up a ‘solar calendar’ in the world, the very first of its kind, named ‘At-Twaqwimush Shamsi’. This calendar could have been used.”
Mujaddidey A’azwam Mamduh Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “The prime intention of all our jobs would be to seek the satisfaction of Allah Pak and Huzur Pak Swallalahu ‘Alaihi Wa Sallam. Allah Pak Dictated, “Follow not the kaafir and mushriqs”. In order to abide by that instruction, we must abandon using the gregorian calendar and begin using a Muslim developed Shari’ah Twaqwim (calendar). Programmes of implementing this could be taken up by discussing with those who are scholar on the subject.”
The Daily Al Ihsan, 4 June, 2012

Attaqweemush-shamsi: The Shamsi Calendar, The New Solar Calendar for Muslims ;

Article Written By ibsohel

Allah Pak Dictates in Quran Shareef, “Do not follow Kaafir and mushriq”.
In this regard it is also Declared in Hadee’s Shareef, “He, who follows a nation, is belonged to them.”
Following this Ayat Shareef and Hadee’s Shareef, this unprecedented Mubarwak Tajdid has been accomplished. Which is accomplished as Attaqiush-Shamsi ie. the Solar year calendar. The Naming of the days and the months are also done according to Shari’ah  hundred percent. SubhaanAllah!
On the opposite side, the socalled gregorian Calendar is the garrison of kufri myths and beliefs. Such as the names of the days and months are designated according to name of the gods and planets. Following of that is completely Haraam as Allah Pak Ordered, “Do not follow Kaafir and mushriq”. Look at the first page for details.
Allah Pak Dictates in Quran Shareef, “Do not follow kaafir, mushriq ie. jews-christians and mushriqs (polytheists)”. In this regard it is also Declared, “He, who follows a nation (excluding US), is belonged to them.”
As a consequence, being adorned by the Mubarwak Blessings and supplications of Habeebullah, prime point of Allah Pak’s attention, Imam and Mujtahid of the era, Mamduh Hajrat Murshid Qiblah ‘Alaihis Salaam, His Mubarwak Successor, Awladey-Rwasool, Qutwubul ‘Alam, Khwalifatullah, Khwalifatur Rwasoolillah, Khwalifatul Umam, Hajrat Shahjada Qibla ‘Alaihis Salaam provided this Sacred Calendar with the very special Nesbot (relationship) with Allah Pak and Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam.
So that, Muslims can follow this Mubarwak Calendar i.e. Quran Shareef and Hadis Shareef in lieu of gregorian calendar of the kaafir.
Establishment and designation:
Attaqweemush-shamsi: This Calendar is established , patronized and designated by Hajrat Khwalifatullah,Khwalifatur Rwasoolillah, Khwalifatul Umam Hajrat ShahJada Huzur Qiblah ‘Alaihis Salaam.
gregorian calendar: gregorian calendar is named in the name of the lewd pope gregory (who had an illegitimate son).
Source
Attaqweemush-shamsi: This solar Calendar is accomplished by the Ilham-Ilkah through special Divine help of Allah Pak  excluding all other worldly calendars
gregorian calendar: This calendar is originated from the calendar of the superstitious    romans.
Naming of the dates:
Attaqweemush-shamsi: Attaqweemush-shamsi is named after everyday of Arabic month.
gregorian calendar: The romans was used to relate their so called god with planets as described as below
Saturday – saturday is named after the name of the planet saturn

Sunday- Day of God

Monday- Moon’s day (relating the name as the goddess of moon)
Tuesday - (Evoluted from the name of the so called god tyr)
Wednesday – wednesday is named after the name of so called god, mercury.
Thursday is  derived in the  name of so called god thor.

Friday –  is also named after the name of frigg.
Attention:
Muslims should never use the names of days after the planets and so called gods.

Annual deviation
Attaqweemush-shamsi:  Less than 0.2 second
Where is the annual deviation of the gregorian calendar is almost 27 seconds.
The excellency of the Muslims
Attaqweemush-shamsi: For the Khidmah  of the Muslims, all kaafir are created, this is why all kaafir have to follow Muslims. If the shamshi Calendar is  publicised all over the world, the kaafir will follow it gradually. The eminence and aristocracy of Muslims would be proved.
gregoorian calendar: Muslims would be able to abstain from following kaafir and the kaafir would be able to realize the errors of their calendar and would suffer from inferiority complex.
http://attaqweemush-shamsi.net/

http://www.al-ihsan.net

Finger Print Is Best For ID Card :

Article Written By ibsohel



Finger print is best for ID card
Because:
1. preparing a photo is so much time consuming. you need a camera, you need to process it and then you have to print. You need some separate arrangements. I am not considering any forgery or external manipulation in photography.
2. In case of travellers or public, matching of fingerprints is not one to many rather you have to match one to one which is a matter of seconds for fingerprint scanner. Here, the examiner has to examine the concerned person’s fingerprint with a scanner with the fingerprint of that person put on a Id card or in a database archive. And offcourse, it is 100% accurate and dependable without any doubt. But in this case, photography is not at all reliable as the examiner has to look at the photography and at the person with keen eyes and sometimes, many fellons cheat the examiner with make up, dress-up, hair style etc.

3. In case of crime detection, finger print is undoubtedly best choice though here one particular fingerprint is matched with the archive of fingerprints which may take time but here time is not a factor. And offcourse, with modern computerized system, it is more accurate, dependable and no manual work is required. You can google finger print matching and see how much advance this types of science is. Whereas, the photography matching is quite hard and not at all dependable and need all time manual work.
4. Regarding the cost, just check the price of photography ( or cctv) and the price of a finger print scanner. I am doing a project on this issue. Making an ID Card with photo of human face is much more costly for a group of people than a Id card(without photo) with finger print scanner machine. Even in case of accessing, you dont need the card as your own finger works as the access key.

http://www.al-ihsan.net

Five Sacred Nights that the Supplications are Sure to be Granted!

Article Written By ibsohel

Noor-e-Mujassam, Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam Declares, “Verily there are five definite nights that the supplications are sure to be granted. 1. The first night of the month of Rajab. 2. Shab-e-Barat. 3. Shab-e-Qadr. 4 & 5. Two nights of the two Eid”. The sacred night of the Shab-e-Barat is the night for supplications to be granted; a night for achieving blessings, prosperity, peace and salvation. In order to celebrate the scared Shab-e-Barat, Muslims of the whole world should arrange to keenly look for the crescent for the month of Sha’ban. It is Wajib-e-Kifaya to look for the fresh moon every month and it is Far’d (mandatory) to start an Arabic month on the right date. Therefore, it would appropriate for all Muslim countries including Saudi Arabia to make special arrangements to look for the moon of Sha’ban and begin the month on the correct date by observing the moon with bare-eyes.
Focal Wali-Allah of this age, Imam and Mujtahid of the age, Imaamul Aimmah, Qutwubul A’alam, Awladur Rwasool, Habeebullah, Mamduh Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam of Rajarbagh Shareef, Dhaka, Says, “In order to celebrate the scared Shab-e-Barat, Muslims of the whole world should arrange to keenly look for the crescent for the month of Sha’ban. It is Wajib-e-Kifaya to look for the fresh moon every month and it is Far’d (mandatory) to start an Arabic month on the right date”. He made those remarks while discussing the significance of the sacred month of Sha’ban and the aspects of starting an Arabic month on a right date.
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “The day or the time that the moon for the sacred month of Sha’ban shall be viewed in any part of the world, the sacred Shab-e-barat shall be observed on the night following the 14th day since that day (or time). The sacred Shab-e-Barat is the night for having the supplications accepted. A night for achieving blessings, prosperity, peace and salvation.”
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “If the month starts in a region without watching the moon, that area shall be obviously deprived of the blessings of the Shab-e-Barat. If moon is visible in any one of the two neighbouring countries or regions, that country or region would be blessed with the gifts of Shab-e-Barat on that day while the other country or region gets it on a different day (rightly on the 14th night as per counting).”
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “Here the aspect of having received the blessings, peace and prosperity is not only ‘date-related’ but is wholly on abiding by the instructions of Allah Pak and Habeebullah, Huzur Pak Swallallahu ‘Alaihi Wa Sallam and Their exclusive satisfaction. Having had blessings at one place, yet some people might remain deprived from it because of (ill) Niah (desires).”
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “Even if the Arabic month begins in some country or place by viewing the moon, yet for non-compliance and defying the orders of the Shari’ah, people of that country or region would go deprived from the great blessings and gifts of the sacred Shab-e-Barat.”
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “Saudi Arabia and all other Muslim countries should make special arrangement to look for the moon of Sha’ban and begin the month on the correct date by observing the moon with bare-eyes.”
Mujaddidey A’azwam Ha’drat Murshid Qibla ‘Alaihis Salaam says, “In Bangladesh, the crescent for the sacred moth of Sha’ban should be looked for on the 22nd of Auwal, 1380 Shamsi, 20 June 2012 Isaayi, Yawmul ‘Arbiayee (Wednesday) evening. The sun sets at Dhaka on that day at 06:48 pm and the moon sets at 07:22 pm. The difference between the sunset and the moonset shall be around 34 minutes. The position of moon during the sunset would be 6 degrees and 50 minutes above the horizontal line; angular separation would be 10 degrees and 38 minutes. The sun would be at an azimuth of 296 degrees and the moon shall have to found at an azimuth of 288 degrees. There is no possibility of the crescent to be visible that day.”

http://www.al-ihsan.net